সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: 'দুর্নীতির মাত্রা (Recruitment Scam) অগাধ, সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের তদন্ত হওয়া উচিত', নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (TMC MP Abhishek Banerjee)মামলায় নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের (Calcutta High Court)। তদন্তে কোর্টের  হস্তক্ষেপের অভিযোগ খারিজ করে ডিভিশন বেঞ্চ (Division Bench) আরও মন্তব্য করে, 'তথ্য প্রমাণ, নথির অভাব দেখলে আদালত চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে না।' সঙ্গে আরও বলা হয়, 'সংস্থা এবং সেটির ডিরেক্টরদের অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য তদন্তের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক জন সাংসদ। সম্পত্তির খতিয়ান দিলে ক্ষতি হবে না।' আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে ইডির কাছে অভিষেককে নথি পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে তদন্তে সহযোগিতা করবেন, তেমনই আশা করে আদালত, সংযোজন ডিভিশন বেঞ্চের। 



আর কী?
এদিন কোর্ট আরও বলে, 'সত্য খুঁজে বের করার জন্য স্বচ্ছ ও দ্রুত তদন্ত প্রয়োজন। মাথা তুলে দাঁড়ানোর একটা বদভ্যাস আছে সত্যের।' সঙ্গে আরও বলা হয়, 'শুধুমাত্র স্বচ্ছ তদন্তেই মানুষের আশা-ভরসা ফেরানো সম্ভব।' দোষীদের ধরতে যে সকলকেই চেষ্টা করতে হবে, সে কথাও মনে করায় ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের তরফে আরও বলা হয়, 'নথি দেখে হাজিরার প্রয়োজন মনে হলে ৪৮ ঘণ্টার আগাম নোটিস দিতে হবে।' তবে ১৯ থেকে ২৬ অক্টোবরের মধ্যে ইডি যে অভিষেককে ডাকতে পারবে না, সেটা জানিয়ে দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট যে চলতি বছরে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত শেষ করবে, সে ব্যাপারেও আশা প্রকাশ করে আদালত।
শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ইডির তথ্য ফাঁসের যে অভিযোগ ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ এনেছিলেন, সেটি গত কালই আদালতে ধোপে টেকেনি। বিচারপতি পর্যবেক্ষণে বলেছিলেন, 'গোপন নথি ফাঁস হয়েই থাকে, তবে ইডিকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।' সঙ্গে ইডি-কে বলা হয়, 'আগে নথি দেখুন, প্রয়োজনে ডেকে পাঠান, জিজ্ঞাসাবাদ করুন। ১২ ঘণ্টা, ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করুন, শেষ না হলে আবার ডাকুন। 'জিজ্ঞাসাবাদ শেষ না হলে আবার পরের দিন ডাকুন, তদন্ত শেষ করুন', কড়া বার্তা দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। সেই কড়া অবস্থানই বজায় রইল এদিন।


আর যা...
অন্য দিকে, ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবিতে রাজভবনের সামনে ধর্নার ২৪ ঘণ্টা পার করে ফেলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত কাল, সারারাত ধর্নামঞ্চেই কাটান তিনি। গভীর রাতে অভিষেকের সঙ্গে দেখা করতে যান স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে প্রথমে কলকাতা থেকে দিল্লিতে কর্মসূচি, সেখান থেকে কলকাতায় ফিরে রাজভবন অভিযান করে তৃণমূল। আর তৃণমূল যখন রাজভবন অভিযানে, তখন রাজ্যপাল উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে করে সেখানে থেকেই ফিরে গেলেন দিল্লিতে। এই পরিস্থিতিতে ধর্নামঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত রাজ্যপাল তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করছেন, ততক্ষণ অবস্থান চলবে।


আরও পড়ুন:রাজ্যের ১৪ জায়গায় ED-র ম্যারাথন তল্লাশিতে ২ হাজার পাতার নথি উদ্ধার