সুনীত হালদার, হাওড়া: আলোর উৎসবের আগে সেজে উঠছে শহর থেকে জেলা। বাজারে মাটির প্রদীপের চাহিদাও তুঙ্গে। বাড়তি লাভের আশায় মৃৎশিল্পীরা এই প্রদীপ বানান। কিন্তু জীবনে যেন কাটে না তমসা।
উত্তর হাওড়ার পিলখানা সেকেন্ড বাই লেনের বেশ কয়েক ঘর ভাঁড় পট্টি নামে পরিচিত। এখানে সারা বছর মৃৎশিল্পীরা মাটির ভাঁড় তৈরি করে চায়ের দোকানে দোকানে বিক্রি করেন। এই কাজে বাড়ির মহিলারাও হাত লাগান। এই ভাবেই চলে অভাবের সংসার। কিন্তু কালীপুজো এবং দিওয়ালির আগে বাড়তি লাভের আশায় তারা তৈরি করেন মাটির প্রদীপ। এবারে তাতেও বাঁধা প্রকৃতির। অতিবৃষ্টি এবং খারাপ আবহাওয়ার জন্য সমস্যায় পড়েছেন এই মৃৎশিল্পীরা।
এর ফলে বৃষ্টিতে মাটি সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়েছে। যার জেরে দাম বেড়েছে মাটির। প্রদীপ তৈরীর কারিগররা জানিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার এবং ক্যানিং থেকে এখানে মাটি আসে। এবারে বর্ষার শেষ দিকে অতিবর্ষণের কারণে তাদের ভাঁটিতে মাটির সরবরাহ কমে গেছে। যতটুকু মাটি আসছে তার দামও অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। আগে যেখানে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় ছোট লরি ভর্তি মাটি পাওয়া যেত এখন তা বেড়ে ১৮০০ টাকা হয়েছে। কিন্তু বিক্রেতারা ১০০০ প্রদীপের জন্য মাত্র ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা দিতে রাজি হচ্ছেন। অর্থাৎ এইসব কারিগররা প্রদীপ পিছু মাত্র ৮০ থেকে ৯০ পয়সায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। যদিও খোলা বাজারে তারা দু টাকা তিন টাকা যে যেমন পারছে দামে বিক্রি করছেন।
আরও পড়ুন, হাজরা মোড়ের কাছে পরিত্যক্ত পাম্প থেকে বেরিয়ে আসছে পেট্রোল-ডিজেল! এলাকায় আতঙ্ক
মহিলা কারিগররা জানিয়েছেন, প্রদীপ তৈরি করতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। ছাঁচে মাটি দিয়ে প্রদীপ তৈরির পর রোদে শুকোতে দেওয়া হয়। এরপর উনুনে পোড়ানোর পর রং করা হয়। ফের সেগুলিকে শুকোনো হয়। ফি বছর কালীপুজো এবং দীপাবলীর সময় প্রদীপের চাহিদা বাড়ে। কিন্তু এত পরিশ্রম করেও হাতে সেভাবে লাভের টাকা না আসায় সমস্যায় পড়েছেন কারিগররা।
দীপাবলি আসে এবং যায়। এদের হাতে তৈরি প্রদীপ লোকেদের বাড়ির চারপাশ আলোকিত করলেও মৃৎশিল্পীরা রয়ে যায় প্রদীপের তলায়। সেখানে শুধু অভাবের অন্ধকার।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে