সুনীত হালদার, হাওড়া : দোল খেলা আছে। আছে হইচই। রং নিয়ে মাতামাতি। কিন্তু নেই সেই বাড়ি বাড়ি ঘুরে মট-ফুটকড়াই বিলি। প্রতি বছর দোল উৎসবের আগে ব্যস্ত হয়ে পড়েন হাওড়ার উনসানি শিউলিপাড়ায় মট এবং ফুটকড়াই তৈরীর কারিগররা। তবে সেই রমরমা ব্যবসা নাকি আর নেই। ঐতিহ্যের দোল উৎসব থেকে বাদ পড়ছে কি তবে মট - ফুটকড়াই বিলির রীতি ? নাকি মানুষের স্বাদবদল ঘটেছে ?
সারা বছর হাওড়ার বাতাসা তৈরির কারখানাগুলিতে গুড় ও চিনির বাতাসা, নকুল দানা এবং মুড়কি তৈরি হয়। কিন্তু দোলের ২ সপ্তাহ আগে কারিগররা ব্যস্ত হয়ে পড়েন মট, ফুটকড়াই এবং মুরকি তৈরির কাজে। কারণ দোলযাত্রার দিনে মন্দিরে এবং বাড়িতে রাধা কৃষ্ণ বিগ্রহকে বাতাসা, মট এবং ফুটকড়াই দিয়ে পুজো করার রীতি বহু পুরনো। পুজোর পর এগুলি ঘরে ঘরে প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হয়। এ বছরও তাই চিনির গাঢ় রস ছাঁচে ফেলে কারিগররা তৈরি করছেন রকমারি মট এবং বাতাসা।
আরও পড়ুন :
Holi 2023 : 'ভেষজ রং' লেখা দেখেই বিশ্বাস নয় ! হতে পারে ত্বক-চোখের বিরাট ক্ষতি,কীভাবে বাঁচবেন
তবে কারিগররা বলছেন, আগের মতো চাহিদা নাকি আর নেই। মট এবং ফুটকড়াই এর বিক্রি কমেছে। এক কারখানার মালিকের গলায় আফসোস ঝরে পড়ল। তাঁর কথায়, কোভিডের আগে বিক্রি-বাটা ভালো ছিল। তবে আজকাল নাকি শুধুমাত্র পুজো দেওয়ার জন্য কম পরিমাণে মট কিনছেন অনেকে। মট কেনা কমালেও ফুটকড়াইয়ের চাহিদা বেশ ভালো বলেই বলছেন তাঁরা। দোলের পরেও ফুটকড়াই কেনেন অনেকে। তবে কি ডায়েট সচেতন হয়ে পড়ছে বাঙালি ? তাই উৎসবের অঙ্গ মট কেনা কমিয়ে দিচ্ছেন ?
দোলের আগে থেকেই বিক্রেতারা গোলাপী, হলুদ, সাদা নানা রঙের মটের পসরা দিয়ে দোকান সাজান। সঙ্গে ফুটকড়াই। এবছর দোকানদাররা দোকান সাজালেও তাঁরা জানিয়েছেন ঐতিহ্য অনুযায়ী দোলের আগে দোকান সাজিয়েছেন। তবে পুজো দেওয়ার জন্যে খদ্দেররা মট কিনছেন। বিক্রিবাটা আগের চেয়ে কম। মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা কমে যাওয়ার কারণে এটা হতে পারে বলে তাদের অনুমান।