সন্দীপ সরকার, কলকাতা : দেশজুড়ে ওষুধের গুণমান যাচাই পরীক্ষায় আবার ফেল করল বিপুল পরিমাণ ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, ইঞ্জেকশন! এবার এক লপ্তে মোট ১৫১ টি ওষুধ পাস করে উঠতে পারল না গুণমান যাচাইয়ের পরীক্ষায়। এর মধ্যে ১০টি ওষুধের নমুনাকে জাল বলে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ। বারবার জীবনদায়ী ওষুধ নিয়ে এই ছিনিমিনি খেলা চলছে?মারাত্মক এই প্রবণতায় অজান্তেই ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে না তো? উদ্বেগে মানুষ। আশঙ্কাপ্রকাশ চিকিৎসকদেরও।  

কোন কোন ওষুধ পরীক্ষায় ফেল?

জানা গিয়েছে, কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবে ফেল করেছে ২৬টি ওষুধের নমুনা। রাজ্য ড্রাগ ল্যাবে ফেল করেছে আরও ৫টি ওষুধের নমুনা। গত মাসে বাজার থেকে এই ওষুধগুলি ল্যাবে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় । তারপরই এই উদ্বেগজনক ফল। এর মধ্যে রাজ্য ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবের পরীক্ষায় ফেল  করেছে দমদমের একটি ওষুধ সংস্থার তৈরি হজমের ওষুধ ।  Rabeprazole and Domperidone নামের হজমের ট্যাবলেটের তিনটি নমুনাই ফেল করেছে। উদ্বেগের বিষয় হল এই ওষুধ অনেকেই খেয়ে থাকেন। 

বহুল ব্যবহৃত এই সব ওষুধও জাল !

কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের রিপোর্টে উল্লেখ, কোনও ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ইনজেকশনের ভায়ালে ভাসছে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া। কোনও ইঞ্জেকশন তৈরিতে পরিশোধিত জলটুকুও ব্যবহার করা হয়নি।  রিপোর্ট থেকে আরও জানা গিয়েছে, আমেরিকার সংস্থার তৈরি ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ভেনেটোক্ল্যাক্স ট্যাবলেটের নমুনায়ও জাল পাওয়া গিয়েছে।  ব্রেস্ট ক্যান্সারের ইঞ্জেকশন 'ন্যানড্রোলন ডিকানোয়াতে'-র নমুনাতেও জাল! এছাড়া ব্যথা কমানো, রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করতে ব্যবহৃত হেপারিন অয়েনমেন্টের নমুনাতেও জাল বেরিয়েছে। অ্যামোক্সিসিলিন ও পটাশিয়াম ক্ল্যাভুলেনেট ওষুধের নমুনাও জাল হয়েছে। এছাড়া হজমের ট্যাবলেট প্যানট্রোপ্রাজল এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার ওষুধ টেলমিসারটনের নমুনাও জাল বেরিয়েছে।  চোখের ড্রপের শিশিতে ভুল লেভেল লাগানো হয়েছে, এমন ঘটনাও সামনে এসেছে।

অন্যদিকে,  ওষুধ সংস্থার প্রতিনিধির দাবি, তারা মূলত সরকারি হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহ করে থাকেন। যেমন- যেমন টেন্ডার পাওয়া যায় সেই অনুযায়ী ওষুধ উৎপাদন হয়। এখন কোন টেন্ডার নেই তাই উৎপাদন বন্ধ আছে। যে ওষুধের নমুনা পরীক্ষার জন্য মার্কেট থেকে তোলা হয়েছিল, সেগুলি সঠিকভাবে রাখা হয়েছিল কিনা? সঠিকভাবে পরীক্ষা হয়েছিল কিনা? এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংস্থার প্রতিনিধি।