কলকাতা : এবার বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ভাবনাচিন্তা করছে মৃত স্নেহা বণিকের পরিবার। আজ সকালে আইনজীবীর কাছে যান পরিবারের সদস্যরা।পাশাপাশি, স্নেহার পরিবারের দাবি, গতকাল রাজ্য সরকারের তরফে তাদের সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। সেই টাকা তারা নেবে না বলে দক্ষিণ দমদম পুরসভার প্রশাসক পাচুগোপাল রায়কে জানিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করে স্নেহার পরিবার। 



অন্যদিকে, আগেই মৃত ছাত্রী অনুষ্কা নন্দীর পরিবারও রাজ্যের তরফে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া ২ লক্ষ টাকা ফেরত দেয়। এবার  বাড়ির মেয়ে বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে  মৃত্যুতে সরকারি সাহায্যের টাকা ফেরত দিতে চাইছে এবার মৃত ছাত্রী স্নেহা বণিকের পরিবারও। দাবি পরিবারের। দুর্ভাগ্যজনক এই মৃত্যুর পর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবার।  


বারো বছরের স্নেহা বণিক। ও তার বন্ধু অনুষ্কা নন্দী। দু’জনেই দমদমের মতিঝিল গার্লসের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। খড়দার পাতুলিয়ায় ঘরের মধ্যে জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শেষ হয়ে গেছে গোটা একটা পরিবার! শুধুমাত্র বেঁচে আছে বছর পাঁচেকের এক শিশু! আর এবার সেই একইভাবে জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অকালে চলে গেল দুই বালিকা! আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে নিথর দেহের ওপর মালা দিতে গিয়ে শোকে ভেঙে পড়ল পরিবার! যে ছোট্ট মেয়েদুটা প্রতিদিন খেলে বেড়াত, আজ তাদের নিথর দেহ তোলা হল শবদেহবাহী গাড়িতে। একে অন্যকে ছেড়ে একবিন্দু থাকত পারত না দুই বন্ধু। একসঙ্গে টিউশন যাওয়া থেকে, আঁকা, খেলাধুলা...সবেতেই ছিল অভিন্ন হৃদয়ের সম্পর্ক। এমনকি ভিডিও মেকিং অ্যাপেও তাদের জুটি ছিল জোরদার। এই জুটি শূন্যে মিলিয়ে গেল একসঙ্গেই!

আরও পড়ুন : 



জল জমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পরপর মৃত্যু, আবার নিম্নচাপের কথা শুনে ভয়ে কাঁটা মানুষ


বুধবার, বিকেলে টিউশনে যাচ্ছিল স্নেহা ও অনুষ্কা। পুরো রাস্তা তখন জলমগ্ন। তার মধ্যেই ঘটে যায় মর্মান্তিক সেই ঘটনা।  বৃষ্টির আগে থেকেই খোলা ছিল বিদ্যুতের তার। এই নিয়ে ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর ও সাংসদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেয় মৃত স্নেহা বণিকের পরিবার। 


এদিন ঘটনাস্থলে যাওয়ায় দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটরকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় মৃতের পরিবার। 'মানুষকে সচেতন হতে হবে। বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে দুই বালিকার মৃত্যুতে  নাগরিকদের সতর্ক থাকার বার্তা দেন সাংসদ সৌগত রায়। পাশাপাশি, প্রশ্ন তোলেন পুরসভার ভূমিকা নিয়েও। 


দেখা গেছে, দমদম মতিঝিলের বান্ধবনগর কার্যত মৃত্যু ফাঁদ। ঘটনাস্থলের কাছেই বেশ কয়েকটি ল্যাম্প পোস্ট খোলা অবস্থায় ছিল। বেরিয়ে ছিল বিদ্যুতের তার। ফলে দুই বালিকার মর্মান্তিক মৃত্যুর পরেও দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই গিয়েছে।