দুর্গাপুজো উপলক্ষে বিশেষ সম্মান ও পুরস্কার ঘোষণা করেছে রাজভবন। নাম, দুর্গা ভারত সম্মান। আর পুজোর পুরস্কার নিয়েই সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। বাংলার সেরা দুর্গাপুজোগুলিকে বিশ্ববঙ্গ শারদ সম্মান পুরস্কার দেয় রাজ্য সরকার। এবার রাজভবনের তরফেও দুর্গাপুজোর পুরস্কার ঘোষণা করায়, জল্পনা চলছে, এই ইস্যুতে ফের কোনও সংঘাত বাধবে না তো?


হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন, আকাশ-বাতাসে পুজোর আমেজ। বাড়ি থেকে বারোয়ারি - সর্বত্র চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজভবনও, কারণ, এবারই প্রথম, দুর্গাপুজোর জন্য বিশেষ সম্মান ও পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়েছে রাজভবনের তরফে। নাম দুর্গা ভারত সম্মান কিন্তু, রাজভবনের তরফে নজিরবিহীন এই উদ্যোগকে কেন্দ্র করেও কি ধীরে ধীরে ঘনাচ্ছে সংঘাতের মেঘ? রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের সম্পর্কের সমীকরণ আপাতত যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে বিভিন্ন মহলে এই প্রশ্ন কিন্তু জোরালভাবে উঠছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্য সরকারের তরফে প্রতি বছর রাজ্যের সেরা দুর্গাপুজোগুলিকে বিশ্ববাংলা সম্মান দেন মুখ্যমন্ত্রী।


কার্যত সেই পথে হেঁটে এবার দুর্গাপুজোর পুরস্কার ঘোষণা করেছে রাজভবনও। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, রাজভবনের তরফে ঘোষিত দুর্গাপুজোর পুরস্কারের জন্য সারা ভারত থেকেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাত চরমে গেছে। রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছে সরকারপক্ষ। বাছা বাছা বিশেষণ প্রয়োগ করে রাজ্যপালের সমালোচনা করতে ছাড়েননি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ঠিক এই রকম পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজোর সম্মান দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে রাজভবন। যাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে সংঘাতের প্রবল জল্পনা তৈরি হয়েছে।



রাজভবন সূত্রের খবর, দুর্গাপুজোর পুরস্কারের মনোনয়নের জন্য একাধিক বিভাগ থাকছে। শিল্প, শিক্ষা, সাহিত্য, বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি, সমাজসেবা, ক্রীড়া-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতীদের ৩টি বিশেষ পুরস্কারে সম্মানিত করা হবে।



  • প্রথম - দুর্গা ভারত পরম সম্মান। ১ লক্ষ টাকা পুরস্কার।

  • দ্বিতীয় - দুর্গা ভারত সম্মান। পুরস্কারমূল্য ৫০ হাজার টাকা।

  • তৃতীয় - দুর্গা ভারত পুরস্কার। যাতে দেওয়া হবে ২৫ হাজার টাকা।


৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে durgabharatawards@gmail.com - এই ইমেলে, মনোনয়নপত্র পাঠাতে বলা হয়েছে। ২০২১-এর ডিসেম্বরে UNESCO-র ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ স্বীকৃতি পায় কলকাতার দুর্গাপুজো। কার কৃতিত্বে সেই স্বীকৃতিলাভ, তা নিয়ে বিস্তর রাজনৈতিক বিতর্ক চলেছিল তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। শুধু তাই নয়। দুর্গাপুজো এখন রাজনৈতিক দলগুলির কাছে নিবিড় জনসংযোগের অন্যতম মাধ্যমও বটে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে কে কোন পুজোয় যুক্ত থাকবেন বা উদ্বোধন করবেন - তা নিয়েও রেষারেষি টের পাওয়া যায়...ফলে এবার রাজভবনের তরফে দুর্গাপুজোর পুরস্কার ঘোষণার পরে, তা নিয়েও সংঘাতের মেঘ ঘনানোর জল্পনা প্রবল থেকে প্রবলতর হচ্ছে।