নিবেদিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা : যন্ত্রগণক একে একে মানুষের অনেক কাজই করে দিয়েছে সহজ। আগামীদিনে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স একজন মানুষের কাজ হুবহু করে দিতে পারবে বলে বিশ্বাস প্রযুক্তিবিদদের। সেই প্রক্রিয়া শুরুও হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসা থেকে শিল্প, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাড়ছে রোবটের ব্যবহার। সাধারণ মানুষ ইতিমধ্যেই দেখে ফেলেছে রোবটকে খাবার সার্ভ করতে । হাতে হাতে প্রয়োজনীয় জিনিস তুলে দিতে। এবার রোবট করবে ঠাকুর বরণও। এমনকী মণ্ডপে ঢোকার সময় দর্শকদের 'হাই-হ্যালো'ও করবে রোবটই। এ রোবটের নাম অন্নপূর্ণা ।
দক্ষিণপাড়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজোয় এবারের মূল আকর্ষণই অন্নপূর্ণা। সঙ্গে অবশ্য রয়েছে আরও অনেক চমক ৷ এই মণ্ডপে রোবটই করবে দেবীবরণ। ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে তার অনুষ্ঠানিক ট্রায়াল। একটি ছোট প্রতিমা রোবটকে দিয়ে বরণ করানো হয়েছে আগেই। এই বাংলায় দেশীয় সংস্থা দ্বারা নির্মিত এই রোবটের নাম অন্নপূর্ণা ৷ রোবটটি নাকি আবার কথা বলতে পারে ।
একে কিন্তু কলকাতাবাসী আগেও দেখেছে। কখনও এ শহরের নামি শপিং মলে, কখনও আবার 'দাদাগিরি'র মঞ্চে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসাও পেয়েছে অন্নপূর্ণা। এবার তাকেই মণ্ডপের শো-স্টপার করেছে বাগুইআটি দক্ষিণপাড়া দুর্গোৎসব কমিটি। পেশাদার প্রযুক্তিবিদরা দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করবে অন্নপূর্ণাকে।
অন্নপূর্ণা রোবট কীভাবে কাজ করে
কলকাতার স্টার্ট-আপ কোম্পানি থিঙ্ক এগেইন ল্যাব এই রোবটটি তৈরি করে ইতিমধ্যে বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে প্রশংসা পেয়েছে। টেলিভিশনে জনপ্রিয় শোতে সকলের হাততালি কুড়িয়ে নিয়েছে । সংস্থার কর্ণধার অরিজিত হাজরা জানিয়েছেন, রোবট অন্নপূর্ণার কার্যকলাপে মুগ্ধ ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও ।
স্টার্ট-আপ সংস্থার সিইও অরিজিৎ হাজরা বললেন, "অন্নপূর্ণাকে প্রযুক্তিগতভাবে একটি সেমি-হিউম্যানয়েড বাটলার রোবট বলতে পারেন যা একাধিক কাজ করতে সক্ষম। আমরা আরও অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করছি, যা পর্যায়ক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।" অন্নপূর্ণার উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার।
৬৩টি ভাষায় সাড়া দিতে পারে অন্নপূর্ণা !
অতীতে কলকাতার একটি জনপ্রিয় মলে অষ্টমীর দিন এই রোবটকে দেখা গিয়েছিল। " কথা বলার সময় প্রোগ্রাম মোডে, এটি ৬৩টি ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে বলে দাবি করলেন এর নির্মাতা প্রযুক্তিবিদ।
বাগুইআটির ওই পুজো কমিটির সেক্রেটারি শুভজিৎ দাস বলেন, “আমাদের পুজোর বয়স ৬২ বছর এবং আমরা এমন কিছু করতে চেয়েছিলাম যা আগে কখনও হয়নি।”