রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান : দুর্গাপুজো মানেই নতুন নতুন গন্ধ চারিপাশ থেকে। জামা কাপড়, ঝলমলে পোশাকে সেজে ওঠার স্বপ্ন তো সব্বার ! আর তা কিনতেই শপিংমল গুলোতে এখন উপচে পরা ভিড়। কিন্তু দুর্গা মা আর তাঁর ছেলে-মেয়েদের শপিং কোথা থেকে হবে ? তাই এখন বনকাপাশি গ্রামে উপছে পড়া ভিড়। সেখানে হচ্ছেটা কী ? প্রতিমার পোশাক পছন্দ করতে পুজো উদ্যোক্তারা ভিড় জমাচ্ছেন বনকাপাসি গ্রামে।
ঠাকুরের সাজের বাজার
শোলার সাজের গ্রাম হিসেবে পরিচিত পূর্ব বর্ধমানের বনকাপাসি গ্রাম । প্রতিটি ঘরে ঘরেই তৈরি হয় শোলার সাজ। পুজোর আগে তাই এই গ্রামে শপিং মলের মতোই হইচই। তবে এখানে মানুষের নয়, শুধু ঠাকুরের পোশাক পাওয়া যা, এই আর কী।
দেবীর সাজ
শোলা,জরি ও চুমকি দিয়ে দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী ,কার্তিক ,গণেশের ঝলমলে পোশাক, সাজসজ্জা আর গহনা বিক্রি হচ্ছে। আদি সাদা সাজ থেকে শুরু করে রংবেরঙের শোলার সাজ তৈরি করতে এখন ব্যাস্ত বনকাপাসির শিল্পীরা। মাথার মুকুট, কানের কলকা, আঁচল, হাতের বালা, পায়ের নুপূর সবই তৈরি হচ্ছে শোলা দিয়ে। আর তা দিয়ে সেজে উঠবেন দেবী দুর্গা ,লক্ষ্মী সরস্বতী। কার্তিক গণেশের জন্য তৈরি হচ্ছে রাজ পোশাক থেকে শুরু করে, নিত্য নতুন ডিজাইনের পোশাক।
পুজো উদ্যোক্তারা সেই সব শোলা ও জরির সাজ সরঞ্জাম পছন্দ করতে পৌঁছে যাচ্ছে বনকাপাসি গ্রামে। শপিংমলে গিয়ে ঠিক যেমন নানান রংবেরঙের পোশাক থেকে বেছে নেন সকলে, ঠিক সেই ভাবেই দেবী দুর্গার জন্য পছন্দের রংবেরঙের শোলা ও জরির সাজ বেছে নিচ্ছেন পুজো উদ্যোক্তারা।
দেবী দুর্গার সাজের জন্য কলকাতা থেকেও অর্ডার আসছে বনকাপাসি গ্রামে। এবারে পঞ্চাশ ফুটের শোলার সাজের অর্ডার এসছে এই গ্রামে। সেই সাজ তৈরি করতে ব্যাস্ত শোলা শিল্পে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত আশিস মালাকার। তিনি বলেন এর আগে এত বড় শোলার সাজের অর্ডার আর কখনো আসেনি।
জানা গেল, বনেদি বাড়িগুলি থেকে মূলত আভিজাত সাদা শোলার সাজের অর্ডার আসে বেশি। আর ক্লাবগুলো চাইছে রংবেরঙের ঝলমলে শোলার উপর জরির কাজ করা সাজ। বর্ধমান থেকে বনকাপাসি গ্রামে শোলার সাজ কিনতে এসে এক পুজো উদ্যোক্তা তো বলেই ফেললেন আগে দেবী দুর্গার সাজ পছন্দ করে কিনব, তারপর ছেলেমেয়েদের নতুন পোশাক কিনতে নিয়ে যাব শপিংমলে।