সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি : দিনকয়েক আগেই নিহত চিকিৎসকের মা সবার উদ্দেশে বলেছিলেন, লক্ষ্মীরভাণ্ডারের সুবিধা নেওয়ার আগে ভাববেন, তাঁদের লক্ষ্মী সুরক্ষিত কিনা। এবার সেই কথারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল হুগলির আরও একটি পুজো কমিটির আয়োজকদের মুখে। বললেন, 'সরকারি অনুদান চাই না, আগে বিচার চাই। বাংলার মেয়ের এই মর্মান্তিক পরিণতি ঘিরে প্রতিবাদে সরব হচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষজন। কবি, সাহিত্যিক থেকে নাট্যকর্মী থেকে পুজোর আয়োজকদের মুখে একটাই কথা, বিচার চাই। এই আবহেই একের রক এক পুজো কমিটি ফেরাচ্ছে রাজ্য সরকারের পুজো অনুদান। এই তালিকায় আছে কলকাতার পুজোও।
হাতে আর মেরেকেটে এক মাস। তারপরই ঢাকে কাঠি পড়বে বাঙালির প্রাণের উৎসবের। কিন্তু, এখন ঘরের মেয়ের বিচার চায় বাংলা। আর তাই একের পর এক পুজোর আয়োজকরা সরকারি অনুদান ফেরাচ্ছে। হুগলির উত্তরপাড়া, কোন্নগর সহ বিভিন্ন জেলার পুজো কমিটি এবার সরকারি অনুদান নিতে তাদের অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়া নদিয়ার বেথুয়াডহরি টাউন ক্লাব সরকারি অনুদান প্রত্যাখানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে সরকারি অনুদান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ কলকাতার হাইল্যান্ড পার্ক উৎসব কমিটিও। এবার একই পথে হাঁটল বৈদ্যবাটির একটি ক্লাব। আর জি কর-কাণ্ডের আবহে পুজো-অনুদান নেবে না বলে জানাল আরও একটি ক্লাব।
বৈদ্যবাটি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদগোপ পাড়া মহিলা মিলন চক্র পুজো কমিটি দুর্গাপুজোর অনুদান নেবে না বলে প্রশাসনকে জানিয়েছে। সরকারি অনুদান চাই না, চাই বিচার। জানিয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। এই পুজোটি পুরোপুরি মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত। তাদের প্রতিনিধিরা জানালেন, 'মেয়েরা তো মায়ের জাত। আমাদের তো সব সময়ই আমাদের মেয়েদের জন্য চিন্তা হয়। হাসপাতালকে তো আমরা অন্যতম সেফ জায়গা হিসেবে ভাবি...সেখানেই যদি এমন ঘটনা হয়...আর যেভাবে এখানে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চলছে, তাতে আমাদের মনে হয় এই সরকারের থেকে কোনও অনুদান নেওয়া ঠিক নয়। যদি কোনও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়, তাহলেই পরের বার অনুদান নেওয়ার কথা ভাবব । '
আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে ও কাঞ্চন মল্লিকের সাম্প্রতিক মন্তব্যের বিরোধিতা করে রাজ্য সরকারের 'বিশেষ চলচ্চিত্র পুরস্কার' ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। নাট্যক্ষেত্রে রাজ্য় সরকারের সর্বোচ্চ সম্মান 'দীনবন্ধু মিত্র পুরস্কার' ফেরান নাট্য়কার চন্দন সেন। পশ্চিমবঙ্গ নাট্য অ্যাকাডেমির দেওয়া শ্রেষ্ঠ নির্দেশকের সম্মান ফেরান নাট্য পরিচালক বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমির দেওয়া পুরস্কার ফেরাতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিবকে চিঠি দেন অভিনেতা সুপ্রিয় দত্ত।