মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান : অষ্টমীর রাতে দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে নিজের হাতে গড়েছিলেন মূর্তি। প্রথাগত মন্ত্র নয়, নিজের ভাষাতেই পুজো শুরু করেছিলেন আদিবাসী যুবক। আজও মূর্তি গড়ার দিন থেকেই ভক্তি, নিষ্ঠা আর শ্রদ্ধার সঙ্গে দেবীর গান, হরিনাম সংকীর্তন আর নিজেদের তৈরি মন্ত্র পড়ে দেবীবন্দনা হয়। কাঁকসার হরিকির আদিবাসী গ্রামের দুর্গাপুজো এই জন্যই স্বতন্ত্র, অভিনব।
এই আদিবাসী গ্রামের দুর্গাপুজো একেবারেই ব্যতিক্রমী। পাঁচ বছর আগে খেলার ছলে মূর্তি গড়েছিলেন আদিবাসী গ্রামের রবীন্দ্রনাথ হাঁসদা নামের এক আদিবাসী যুবক। পুজোও শুরু করেছিলেন। অষ্টমীর রাতে ওই যুবক দেবীর স্বপ্নাদেশ পান বলে জানান। তারপরই জাঁকজমক করে পুজো শুরু হয়।
আদিবাসী পরিবারের দাবি, পুরোহিত পুজো করতে বসলে পুরোহিতের উপর ভর করেন দেবী। সেই ভয়ে পুরোহিত চলে যায়। তারপরেই নিজেরই মন্ত্রে পুজো শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ হাঁসদা। তাতে দেবী সন্তুষ্ট হন। একসময় পরিবারের কর্তা বলাই হাঁসদাকে স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন মা। এছাড়া আরও একটি দাবি আছে গ্রামবাসীর। তাঁরা মনে করেন, একবার পরিবারের মহিলার উপর অশুভ শক্তিও ভর করেছিল। ভবতারিণী রূপে দেখা দিয়ে সেই অশুভ শক্তির বিনাশ করেছিল মা।
রবীন্দ্রনাথ হাঁসদা বলেন, 'আমরা মায়ের মূর্তি গড়ার আগে পুজো করি। হরিনাম আর মায়ের গান গাই। মা যেদিন থেকে বাড়িতে এসেছেন, সেদিন থেকে দুঃখ কষ্ট সব দূর হয়ে গিয়েছে। চারদিন ধরে পুজো করি আমি, আমার দাদা, দিদি আর বাবা। বহু মানুষ আসেন পুজো দেখতে। সুখ সমৃদ্ধিতে ভরেছে পরিবার।'
বলাই হাঁসদা বলেন, 'কোনও মন্ত্র নেই, মায়ের নির্দেশে আমরা নিজেরাই পুজো করি। অগাধ আস্থা আর মনের ভক্তি ভরে পুজো দেওয়া হলে মা মনের ইচ্ছা পূরণ করেন।'
শুধু হাঁসদা পরিবার নয়, এই এখন এই পুজো গোটা আদিবাসী গ্রামের। সকলের কাছেই তিনি অতি জাগ্রত দেবী। কাউকে খালি হাতে ফেরান না। এখন পুজোর প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে।
আরও পড়ুন :
পুজোর আগে লাস্ট উইকএন্ড ভাসবে বৃষ্টিতে? আবহাওয়া দফতর থেকে এল বড় বার্তা
২০২৪ এর দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট
- ষষ্ঠী পড়ছে ৯ তারিখ।
- ১০ তারিখ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সপ্তমী।
- ১১ তারিখ অর্থাৎ শুক্রবার মহাষ্টমী। ওই দিনই পড়ছে মহানবমী।
- নবমীর পুজো শেষ হবে পরদিন ভোরে। ১২ অক্টোবর শনিবার বিজয়া দশমী।