কলকাতা: ত্রিধারা সম্মিলনী পুজোমণ্ডপের (Durga Puja 2024) ভিতরে বিচার চেয়ে স্লোগানের ঘটনায় গ্রেফতার ৯ জন। ধৃতদের ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 


বিচার চেয়ে স্লোগানের ঘটনায় গ্রেফতার: গতকাল ত্রিধারা সম্মিলনীর কাছে কয়েকজন ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দেন। এরপরই ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের জোর করে প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় লালবাজারে। এরপর ৯ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের আজ আলিপুর আদালতে তোলার হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে দেওয়া হয় জামিন অযোগ্য ধারা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে মামলা দায়ের। প্রতিবাদে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে রাতভর ধর্নার পর আলিপুর কোর্টের সামনেও প্রতিবাদ চলছে। 


স্লোগান দিয়ে গ্রেফতার হওয়া আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩৫৩(২) ধারা, ৩৫৩(৩)ধারায় রুজু করা হয় মামলা। এর পাশাপাশি মামলা রুজু হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল মেনটেনেন্স অফ পাবলিক অর্ডার অ্যাক্টের ৯ নম্বর ধারাতেও। যা জামিন অযোগ্য। বৃহস্পতিবার অভিযুক্তদের আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন, এরা প্রত্যেকেই ছাত্র। এরা একটি প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিল। ত্রিধারায় গন্ডগোল। অথচ সেই পুজো কর্তৃপক্ষ কোনও অভিযোগ করল না। সিজার লিস্টে ৯টা ফোন শুধু বাজেয়াপ্ত হয়েছে। কোথায় অস্ত্র তো নেই। হিংসা ছড়ানোর মত কোনও বক্তব্য, কোনও তথ্য প্রমাণ পায়নি পুলিশ। অথচ লিখছে হেট স্পিচ। ত্রিধারার সিসিটিভি ফুটেজ দেখাতে পারবে না পুলিশ। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা যাবে বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন। নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। পুলিশ এতকিছু বলছে। মনে হচ্ছে তাঁরা যেন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে গেছে। তাঁরা কি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে? যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা কেউ পুজো প্যান্ডেলের ভিতর স্লোগান দেয়নি।

এরপর পাল্টা রাজ্য সরকারের আইনজীবী বলেন, পুজো মণ্ডপে এত মানুষের সমাগম। সেখানে মহিলা, শিশু প্রত্যেকে আসেন। সেখানে এরকম একটা প্রতিবাদ সংঘটিত করা থেকে যেকোনও বড় বিপদ ঘটতে পারত। মানুষ পদপিষ্ট হতে পারতেন। গতকালের ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছেন। সাধারণ মানুষও আহত হয়েছেন। এই মামলায় জামিন দিলে বাকিরা উৎসাহিত হবে। উৎসবের মধ্যে বিশৃঙ্খলতা তৈরি হতে পারে। তাই ধৃতদের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানাচ্ছি। 
সব শুনে প্রথমে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। দুপক্ষের সওয়াল জবাব শুনে  অভিযুক্তদের আইনজীবীরা অনুরোধ করায় ১ দিন কমিয়ে তা ১৭ অক্টোবর করা হয়। নির্দেশনামার পরই আদালতের বাইরে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ। কান্নায় ভেঙে পড়েন বাইরে অপেক্ষায় থাকা মানুষজন। কিছুক্ষণ পর, আদালত থেকে প্রিজন ভ্যানে করে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় অভিযুক্তদের।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: Junior Doctors Hunger Strike: অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্মতলা থেকে উঠে যেতে ফের চিঠি পুলিশের