মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: বেআইনিভাবে বালির কারবার রুখতে তৎপর পুলিশ। দুর্গাপুরে দামোদরের ওয়ারিয়া ঘাট থেকে বেআইনি বালির কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হল। ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটক ৩ জনের থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বালি ভর্তি কয়েকটি ট্র্যাক্টর। দিনকয়েক আগে বালি পাচারকাণ্ডের মূল পাণ্ডা সুজয় পাল ওরফে কেবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন বালি পাচারচক্রের পাণ্ডা।
পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা, অন্ডাল, জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ সহ বেশ কয়েকটি বালি খাদানের একচ্ছত্র অধিপতি সুজয় পাল। পুলিশ সূত্রে এমনটাই খবর মিলেছে। বালি চুরিতে তাঁর নিজস্ব নেটওয়ার্ক রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই, তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে ফাঁদে পা দেয় অভিযুক্ত। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড়ে অভিযান চালানো হয়। এম.সি টাউনশিপ এলাকা থেকে সুজয় পালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সুজয় পালের নামে অন্ডাল সহ বেশ কয়েকটি থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত। পুলিশের তরফে জানানো, বালি পাচারকাণ্ডের চক্রের নেপথ্যে আর কারা জড়িত, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এরমধ্যেই বালি চুরি রুখতে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। মাফিয়া দৌরাত্ম্য ঠেকাতে নতুন ‘স্যান্ড মাইনিং পলিসি’র ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। নজরদারি চালাবেন মুখ্যসচিব ও অর্থসচিব। বীরভূম থেকে শুরু করে দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া থেকে উত্তর ২৪ পরগনা, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বালি চুরির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সরকার বদলেছে, কিন্তু ছবিটা বদলায়নি। রাজনীতিতে দোষারোপের পালা চলেছে, কিন্তু মাফিয়াদের দাপট কমেনি। যে বালি চুরি ঠেকাতে বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাস হল ‘স্যান্ড মাইনিং পলিসি।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘বালি খাদান নিয়ে নতুন স্কিম। স্থানীয় মাফিয়াদের জন্য করতে পারছি না, বালি, কয়লা, পাথর। যতটা তোলার তার চার ডবল নিয়ে পালিয়ে যায়। স্যান্ড মাইনিং পলিসি। মিনারেল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশনের কাছে দেওয়া হচ্ছে। আগে খননের দায়িত্ব ছিল জেলাশাসকদের হাতে। সেই দায়িত্ব এ বার থেকে মিনারেল মাইনিং কমিটির হাতে থাকবে। পুরো বিষয়টি দেখাশোনা করবেন মুখ্যসচিব ও অর্থসচিব।’