কলকাতা : সাতসকালে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল কলকাতা। কম্পন টের পাওয়া যায় উত্তরবঙ্গেও। ভূমিকম্পের উৎসস্থল নেপাল। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.১। নেপালজুড়ে তীব্র ভূমিকম্পে আতঙ্ক ছড়ায়। ভূমিকম্পে তিব্বতে ৯৫ জনেরও বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। প্রথম কম্পনের পর ৪ ঘণ্টায় পরপর ৮ বার আফটারশক অনুভূত হয়। বিহারের পাটনা, মধুবনীতেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। ভারত-নেপাল-বাংলাদেশের সঙ্গে কম্পন টের পাওয়া গেছে চিন-ভুটানেও। সাতসকালে মোট ৫টি দেশে ভূমিকম্প। এই পরিস্থিতিতে ভূমিকম্প হলে কলকাতার কী পরিস্থিতি হতে পারে তা নিয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য উঠে আসছে।
এ প্রসঙ্গে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও খড়গপুর আইআইটির মুখ্য গবেষক শঙ্কর কুমার নাথ বলেন, "আমাদের রিসার্চ থেকে দেখেছি, ভূমিকম্প হলে রাজারহাট এবং সল্টলেক ভীষণভাবে বিধ্বংসী আকার ধারণ করতে পারে। এছাড়া পার্কস্ট্রিট, ধর্মতলা এবং মধ্য কলকাতার কিছু অংশ। আমাদের ময়দান কিন্তু সেফ। যাদবপুরের কিছুটা অংশ, সন্তোষপুরের কাছে কিছুটা অংশ, ধাপার কাছে যেখানে আবর্জনা ফেলা হয় সেখানেও ভীষণভাবে বিধ্বংসী আকার ধারণ করতে পারে। এছাড়া হাওড়া ও কলকাতার সংযোগস্থল..ওই এলাকাগুলো ভূমিকম্প ধ্বংসপ্রবণ। ভূমিকম্প হলে ওই এলাকাগুলো বাড়ি-ঘর বসে যাবে। ভিআইপি রোড ধরে এয়ারপোর্টে যাওয়ার পথে তার প্রবেশের অংশও...। যা হবে ..ভূমিকম্প হওয়াতে..সেকেন্ডারি এফেক্টে এই বাড়ি-ঘরগুলো ভেঙে যাবে।"
প্রসঙ্গত, হিমালয়ের পাদদেশ থেকে কলকাতার দূরত্ব ৫০০ কিলোমিটারের আশপাশে। হিমালয় উপত্যকায় ভূমিকম্প হলে তার প্রভাব এ শহরে পড়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয় বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
হিমালয় তৈরির সময় থেকেই ইউরেশীয় ও ভারতীয় প্লেটের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। যার জেরে এই দুই প্লেট বরাবর তৈরি হয়েছে অজস্র চ্যুতি ও খোঁচা। নিরন্তর ঘর্ষণের জেরে যে চ্যুতিগুলিতে শক্তিসঞ্চয় হচ্ছে। সঞ্চিত শক্তির পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হলেই শুরু হয় ঝাঁকুনি।
মাটির নীচে কীভাবে তৈরি হয় কম্পন ? ডজনখানেক ছোট-বড় অংশ নিয়ে গঠিত ভূত্বক। যা টেকটনিক প্লেট নামে পরিচিত। এর নীচেই থাকে গলিত ও অর্ধগলিত ম্যাগমা। তরল ম্যাগমার ওপর ভাসমান দু’টি মহাদেশীয় প্লেটের স্থান পরিবর্তনের সময় প্লেটগুলির কিনারায় প্রবল পীড়নের সৃষ্টি হয়। পীড়ন যখন বড়সড় চ্যুতির সৃষ্টি করে এবং এর অন্তর্নিহিত শক্তি বের করার চেষ্টা করে, ঠিক তখনই কেঁপে ওঠে ভূপৃষ্ঠ। প্লেটগুলি একে অপরের সাথে ঘষা খেতে খেতে কখনও কখনও একটি প্লেট অপরটির ওপরে বা নীচে চলে যায়।