রাণা দাস, কেতুগ্রাম (পূর্ব বর্ধমান): সুদের টাকা শোধ না দেওয়ায় সরকারি কর্মীর ওপর নৃশংস অত্যাচারের অভিযোগ এক সহকর্মী সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। গতকাল সন্ধেয় এই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে। ওই ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগ, ২ যুবক তাঁকে মোটরবাইকে তুলে জোর করে নিয়ে যায়।


এরপর তাঁকে বেহুঁশ করে রেল লাইনে বেঁধে রাখে। এরপর ওই লাইন দিয়ে ট্রেন গেলে তাঁর একটি পায়ের পাতা কাটা পড়ে। অভিযোগ, হুমকি দেওয়া হয়, এরপর টাকা না দিলে মাথা কেটে নেওয়া হবে। স্থানীয় সূত্রে খবর, কাটোয়া মহকুমা জুড়েই সুদের কারবারিদের দাপট ও রমরমা চলছে। তবে এই ধরনের নৃশংস ঘটনার আগে শোনা যায়নি। আহত ব্যক্তিকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  


আক্রান্ত সরকারি কর্মী ভৈরব মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আমাকে বলেছিল একটা পা নেব, পরের দিন গলা নিয়ে নেব। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের এই ঘটনা, কোনও শব্দ দিয়েই বোঝানো যায় না। সুদের টাকা শোধ করতে না পারায়, রাজ্য সরকারি কর্মীর উপর নৃশংস অত্যাচারের অভিযোগ সহকর্মী সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে! রেললাইন থেকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হল ব্যক্তিকে। কাটা পড়েছে ডান পায়ের পাতা। নৃশংস এই অত্যাচারের শিকার হয়েছেন ৫৪ বছরের ভৈরব মুখোপাধ্যায়। 


তিনি সেচ দফতরের কর্মী। বছর খানেক আগে এক সহকর্মী ও কয়েকজনের থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। মাসে ১৮ হাজার টাকার চড়া সুদে মেটাচ্ছিলেন ধার। কিন্তু অভিযোগ, চলতি মাসের ২ তারিখে সুদের টাকা শোধ না করায়, তাঁর উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা।


বৃহস্পতিবার, কেতুগ্রামের দেশের বাড়ি থেকে কাটোয়ায় নিজের বাড়ি ফিরছিলেন এই ব্যক্তি। অভিযোগ, কেতুগ্রামেই দুই দুষ্কৃতী তাঁকে রাস্তা থেকে মোটরবাইকে তুলে নেয়। এরপর তাঁকে কিছু খাইয়ে বেহুঁশ করিয়ে দেয় তারা। তারপর সন্ধেবেলায় শিবলুন হল্ট স্টেশনের কাছে রেললাইনের ধার থেকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ভৈরব মুখোপাধ্যায়কে। স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে খবর পেয়ে, জখম এই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে রেলপুলিশ ও কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। 


ভৈরব মুখোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, আমি আমার ভগ্নিপতির কাছ থেকে ধার করে টাকা দিয়ে দিয়েছিলাম। ওরা আমাকে থ্রেট দিচ্ছিল। কে? সুজিত ধরাই। কী করল? আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে যাবে বলেছিল। কী করে ও? আমাদের সেচ দফতরে কাজ করে। ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম।


আক্রান্ত ভৈরব মুখোপাধ্যায়কে প্রথমে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পরে কলকাতার SSKM-এ ভর্তি করা হয়।