রাণা দাস, পূর্ব বর্ধমান:  মূর্তি চুরি এদেশে নতুন কিছু নয়। খাজুরাহো থেকে কৈলাশ, অজন্তা-ইলোরা দেশের প্রাচীন সব মন্দিরের গা থেকে মূর্তি চুরি করে তা পাচার করে দেওয়ার উদাহরণ রয়েছে। আর এবার মঙ্গলকোটে মন্দির থেকে চুরি গেল বহুমূল্যবান দুটো প্রাচীন বিষ্ণুর প্রস্তরমূর্তি। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে  অজয় নদ থেকে গ্রামবাসীরা মূর্তি দুটো উদ্ধার করার পর মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেছিল। মন্দিরের ভিতরের  বেদি থেকে উপড়ে মূর্তি দুটো মূর্তি চোরেরা নিয়ে গিয়েছে' বলে অভিযোগ। 'এলাকায় মূর্তি চোরের দল আবার সক্রিয় হয়েছে' বলে গ্রামবাসীরা মনে করছে।মঙ্গলকোটের খেঁড়ুয়া  গ্রামের মূর্তি  চুরির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রামে। ইতিমধ্যেই মঙ্গলকোট থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।


গবেষকদের ধারণা মূর্তিগুলো পাল যুগের শিল্পকর্ম


গত দুদশক ধরে মঙ্গলকোটের খেঁড়ুয়া গ্রাম লাগোয়া অজয় নদ থেকে বেশ কয়েকটি প্রচীন প্রস্তর মূর্তি গ্রামবাসীরা উদ্ধার করে। একটি সূর্য মূর্তি পুলিশ প্রশাসনের হাতে তুলে দিলেও বাকি তিনটে মূর্তি গ্রামবাসীরা মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করে। খেঁড়ুয়া গ্রাম লাগোয়া অজয় নদে মাছ ধরতে গিয়ে ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে দুই গ্রামবাসী তিনদিনের ব্যবধানে দুটো বিষ্ণু মূর্তি সহ একটি সূর্য মূর্তি পেয়েছিল। প্রায় আড়াই-তিন ফুট উচ্চতার এই মূর্তিগুলোর প্রত্নতাত্ত্বিক মূল্য বিবেচনা করে প্রশাসন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়েছিল। মূর্তির গঠন শৈলী দেখে গবেষকদের ধারণা মূর্তিগুলো পাল যুগের শিল্পকর্ম।  কিন্তু গ্রামবাসীরা একটি সূর্য মূর্তি প্রশাসনকে দিলেও বাকি দূটো বিষ্ণু মূর্তি মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেছিল।


নদী থেকে পেয়েছিল বিষ্ণু মূর্তি


এর আগে  দুহাজার সালের বন্যার পর তিনফুট উচ্চতার একটি বিষ্ণু মূর্তি গ্রামবাসীরা নদী থেকে পেয়েছিল সেটিকে মন্দিরে রেখে পুজো করত। বড় বিষ্ণু মূর্তিকে মাঝে রেখে দুদিকে দুটো মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল। রবিবার  গভীর রাতে দুষ্কৃতীর দল মন্দিরের গেট খুলে বেদি থেকে বিষ্ণু মূর্তি দূটোকে উপড়ে নিয়ে চম্পট দেয়।৷গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, মন্দিরের গেটে গতকাল তালা দেওয়া হয়নি। সেই সুযোগেই হয়তো চোরেরা মূর্তি দুটি চুরি করেছে।পুলিশের প্রাথমিক অনুমান  মন্দির থেকে ভারী দুটো মূর্তি কাঁধে বা হাতে করে নদী পার করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। মূর্তি নিয়ে যেতে  গাড়ি ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে। 


আরও পড়ুন, পার্থর পর এবার প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর নামেও চার্জশিট


 একুশ সালে বালুরঘাটের পুলিশ উদ্ধার করেছিল এক প্রাচীন অষ্টধাতুর মূর্তি। শুধু তাই নয়, ওই মূর্তির ব্রোঞ্চের রেপ্লিকা-সহ আরও দুটি মূর্তি উদ্ধার করেছিল বালুরঘাট থানার পুলিশ। ইতিহাসবিদের মতে অষ্টধাতুর ওই মূর্তিটি ১৪ শতকের হতে পারে বলে প্রাথমিক অনুমান।  গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বালুরঘাট থানার পুলিশ ক্রেতা সেজে বালুরঘাটের ছিন্নমস্তা পল্লী এলাকার এক বাড়ি থেকে মূর্তি দুটি উদ্ধার করা হয়েছিল।