ঋত্বিক প্রধান, পটাশপুর(পূর্ব মেদিনীপুর) : দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন অবস্থার আরও অবনতি পটাশপুরে । কারও বাড়ির দেওয়ালে বড় বড় ফাটল, কারও আবার ভেঙে পড়েছে বাড়ি । এর মাঝেই কোজাগরি লক্ষ্মীপুজো । কিন্তু অনেকেরই ভেসে গেছে সিংহাসন, ভেঙে পড়েছে ঠাকুরবাড়ি। কোনও রকমে লক্ষ্মী ঠাকুরের ছবি টাঙিয়ে চলছে আরাধনার প্রস্তুতি। এদিকে জল বাড়ায় ফের চিন্তায় পটাশপুরবাসী । কেউ কেউ ত্রাণশিবির থেকে সদ্য ফিরেছিলেন। কিন্তু, ফের জল বাড়ায় চিন্তার ভাঁজ তাঁদের কপালে।


পটাশপুরে জল কিছুটা নামতে না নামতেই, নিম্নচাপের হানায় আবার দুর্ভোগ শুরু। ফের প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। কালীপুজোর পর নিকাশি সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। 


এ যেন ভেন্টিলেশন থেকে বেরোতে চাইছে রোগী, অথচ একটু সুস্থ হতে না হতেই, তাকে ফের চলে যেতে হচ্ছে সেই ভেন্টিলেশনে! দফায় দফায় বৃষ্টিতে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের পরিস্থিতি যেন এরকমই।


কয়েক দিন বৃষ্টি বন্ধ থাকায়, বন্যা কবলিত এলাকা থেকে জল নামতে শুরু করেছিল। কিন্তু পুজোর পরে নিম্নচাপের হানা গুলিয়ে দিয়েছে সব কিছু। দুদিনের ভারী বৃষ্টিতে ফের জল জমতে শুরু করেছে পটাশপুর দু'নম্বর ব্লকের মংলামাড়ো , পালপাড়া, বড়হাট, কাটরংকা সহ একাধিক এলাকায়। এমনটা চলতে থাকলে ফের প্লাবনের আশঙ্কা করেছেন স্থানীয়রা।


পটাশপুরের বাসিন্দা গুণধর দাস বলেন, আগে বন্যা গেল। তারপর গত পরশু থেকে আবার বৃষ্টি। আবার ঘর ভাসবে কিনা চিন্তায়। এর আগে ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। আবার দুশ্চিন্তা হচ্ছে।


কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে গত ১৬ সেপ্টেম্বর প্রথম জল ঢোকে পটাশপুরে। তারপর থেকে দফায় দফায় বৃষ্টিতে পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হয়েছে। এক মাসের ওপর হয়ে গেল এখনও জলবন্দি পটাশপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। জলের তলায় চাষের জমি। ঘরের সামনেই যেন উঠে এসেছে পুকুর। 


পটাশপুরের অপর এক বাসিন্দা নির্মলেন্দু গিরি বলেন, পরিস্থিতি ভয়াবহ। এত জল বাড়ছে পুনরায় বন্যা হলে প্রাণ দিতে হবে। জল পুরো কমেনি। নিম্নচাপের বৃষ্টিতে আবার জল বাড়ছে। ক্ষতিপূরণ না পেলে প্রাণ দিতে হবে।


পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক বলেন, প্রবল বর্ষণ হচ্ছে, তাতে জল আরও বাড়ছে। সমস্যা বাড়ছে। নিশ্চিতভাবে পঞ্চায়েত ও সরকারি ব্যবস্থার মাধ্যমে ত্রাণ পৌঁছনো হবে, যেভাবে বিগত দিনে সাহায্য করা হয়েছে। এখানকার নিকাশির জল পশ্চিম মেদিনীপুর হয়ে বের হয়। জেলাশাসককে জানিয়েছিলাম। তাঁর মাধ্যমে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। কালীপুজোর পর নিকাশি অবরোধমুক্ত করার কাজ শুরু হবে।


পটাশপুরে পুজোর আনন্দ বিসর্জন দিতে হয়েছে জলে। লক্ষ্মীপুজোও জলবন্দি হয়েই কাটবে। কালীপুজোতেও কি ছবিটা বদলাবে? সংশয়ে এলাকাবাসী।