ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর: সদ্য কুমিরের চিৎকারে ঘুম ভেঙেছে কালনাবাসীদের। একেবারে সদর দরজায় কড়া নাড়া শুধু বাকি ছিল। আজ্ঞে হ্যাঁ, চলতি সপ্তাহেই এই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়। আর এবার গুণধর কুমির শিহরণ জাগাল দীঘার অদূরে তালসারির মৎস্যজীবীদের।


পুজোর আমেজ চারিদিকে। তখন সবে তালসারির চরে মৎস্যজীবীরা, জাল ছাড়ার পর, আয়েশ করে বিশ্রাম নিচ্ছেন। এমনই সময় চোখে পড়ে তাঁদের, দূরে তালসারির চরে আরও একজনও শুয়ে আছেন। সম্ভবত রোদ পোয়াচ্ছেন ।  আসলে মৎস্যজীবীরা দেখতে পায় ওই চরে একটি কুমিরটি শুয়ে রয়েছে ! ব্যাস আর কী দেখে আর যাই হোক, বিশ্রাম মাথায় উঠল। এরপরেই দ্রুত খবর দেওয়া হয় ভোগরাই ব্লকের বন দফতরে। বন দফতরের কর্মীরা গিয়েই কুমিরটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এদিকে ঘটনার জেরে মৎস্যজীবীদের মধ্যে একটা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। 


সম্প্রতি সুন্দরবনের লোকালয়ে একাধিকবার কুমির ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটছে। এর আগে পাথরপ্রতিমার লক্ষ্মীজনার্দনপুরের ভুলুগিরির ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় কুমিরটিকে দেখতে পেলে আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন স্থানীয়রা। পুকুরে কুমির ঢুকে পড়ায় এলাকায় শোরগোল শুরু হয়ে যায়। বন দফতরের নলগড়া বিট অফিসে খবর গেলে বনকর্মীরা জাল নিয়ে এলাকায় পৌঁছন। ঘিরে ফেলেন পুরো পুকুরটি। অবশেষে বিকেল চারটে নাগাদ জালে ধরা পড়ে কুমির। তারপর সেটিকে বিট অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সুন্দরবনের নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়। বন দফতরের কর্মীদের ধারণা, পাশের নদী থেকে জোয়ারের জলে সেটি পুকুরে ঢুকে পড়েছিল। 


আরও পড়ুন, 'কলকাতা-সহ রাজ্যের সকল সিভিক ভলেন্টিয়ারের পুজোর বোনাস এক..', ট্যুইট মুখ্যমন্ত্রীর


গত মার্চেও প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটেছিল পাথরপ্রতিমার দিগম্বরপুরে। সেখানকার পঞ্চমেরবাজার এলাকায় বাসুদেব ঘড়ার পুকুরে একদিন সকালে একটি কুমির ভেসে থাকতে দেখেন এলাকারই কেউ কেউ। বিষয়টি চাউর হতে সময় লাগেনি। পাল্লা দিয়ে ছড়ায় আতঙ্ক। যার পর থেকে পুকুরপাড়ে কাতারে কাতারে মানুষের ভিড়। শেষমেশ বন দফতরের রামগঙ্গা রেঞ্জে খবর পাঠানো হয়। বনকর্মীরা এসে জাল দিয়ে কুমিরটিকে বন্দি করেন। বনকর্মীদের ধারণা, পাশের জগদ্দল নদী থেকে কুমিরটি পুকুরে ঢুকেছিল। এর আগেও এই ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। গত বছর অক্টোবরে বাড়ির পুকুরে কুমির চলে আসায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘিতে।