বিটন চক্রবর্তী, (হলদিয়া) পূর্ব মেদিনীপুর:    মাঝসমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে বিকল হয়ে যাওয়া ট্রলারের ১১ জন মৎস্যজীবিকেই উদ্ধার করলো হলদিয়া উপকুলরক্ষী বাহিনী। গত বৃহস্পতিবার কাঁথির পেটুয়াঘাট থেকে মাছ ধরতে যায় একটি ট্রলার। পরে প্রপেলার খারাপ হয়ে বিকল হয়ে যায় একটি ট্রলারটি। দিঘা থেকে ৭০ নটিক্যাল মাইল   দূরে সাগর দ্বীপের কাছে উত্তাল ঢেউয়ের ধাক্কায় ' মা শীতলা' নামে একটি ট্রলারের প্রপেলার ভেঙে যায়।


 সমুদ্র এতটাই অশান্ত ছিল যে, ট্রলারটি প্রায় ডুবে যাচ্ছিল। এমনকি, পাশাপাশি যে সব ট্রলার ফিরছিল তারাও বিপদগ্রস্ত ট্রলারটিকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। পরে খবর পেয়ে উপকূলরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে মৎস্য দফতর। ট্রলারটির নাম, জিপিএস লোকেশন পাঠিয়ে দেয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর হলদিয়া দফতরে। পরে, উপকূলরক্ষী বাহিনীর টহলরত একটি জাহাজ গিয়ে ১১ জন মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। গতকাল রাতেই তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয় উপকূলরক্ষীবাহিনী।


উল্লেখ্য, এরইমধ্যে  নিম্নচাপের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত রাজ্যের দুই সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলা। খারাপ আবহাওয়ার কারণে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়াও জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ফিরে এসেছে বেশিরভাগ ট্রলার। দিঘায় জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত মেরিন ড্রাইভ। হোটেলবন্দি পর্যটকরা।


দিঘায় সিমেন্টের যে বাঁধানো চাতালে বসে, আমেজ করে সমুদ্রের গর্জন শোনেন পর্যটকরা, এখন সেখানেই আছড়ে পড়ছে বড় বড় ঢেউ। বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল দিঘার সমুদ্র।  এই পরিস্থিতিতে মৎস্যজীবীরা যাতে সমুদ্রে না যান, তার জন্য দিঘা ও মন্দারমণি এলাকায় প্রশাসনের তরফে মাইকে সতর্ক করা হচ্ছে। 
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলবর্তী জেলায় বেশি বৃষ্টি তো হচ্ছেই। সেই সঙ্গে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। এই পরিস্থিতিতে সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে পর্যটকদের।  


সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাসে এবারও মেরিন ড্রাইভের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ। ভাইস চেয়ারম্যান, দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান  তরুণ জানা বলেছেন, মেরিন ড্রাইভ তৈরির কাজ চলছিল। বারবার প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও জলোচ্ছ্বাসের ফলে এই মেরিন ড্রাইভের একদিকে যেমন ক্ষতি হচ্ছে, কাজেও বাধা তৈরি হচ্ছে।
খারাপ আবহাওয়ার কারণে দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ডায়মন্ডহারবার, কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, ফ্রেজারগঞ্জ - সর্বত্র সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ট্রলার।সুন্দরবনে সারাদিনই আকাশের মুখ ভার। দফায় দফায় চলছে বৃষ্টি। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া।