কলকাতা: পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ও মানিক ভট্টাচার্যর (Manik Bhattacharya) সঙ্গে সরাসরি যোগ ছিল শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Santanu Banerjee)। এই দু’জনের পৃষ্ঠপোষকতায় শান্তনু দুর্নীতির সাম্রাজ্য চালাতেন। আদালতে রিমান্ড লেটারে দাবি করল ইডি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা, কারা অগ্রাধিকার পাবে, কত টাকায় রফা হবে তা ঠিক করার পাশাপাশি, এজেন্টদের সরাসরি যোগাযোগ রাখতেন শান্তনু। ইডি-র দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির টাকায় বেনামে বা নিজের ব্যবসার ভুয়ো ডিরেক্টরের নামে একের পর এক সম্পত্তি বানিয়েছেন হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ।


জেলে গিয়ে শান্তনুকে জেরা: এর মধ্যে বলাগড়ের চাঁদরায় ৪১ ডেসিমেল আয়তনের ফার্ম হাউসের মালিকানা ইভান কোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের নামে দেখানো হয়েছে। চাঁদরাতেই শান্তনুর ২৮ ডেসিমেল জমি আছে। এছাড়াও, ভুুয়ো সংস্থা তৈরি করে তাতে ডামি ডিরেক্টর, অংশীদার ও কর্মীদের নামে রয়েছে একাধিক সম্পত্তি। ইডি জানতে চায়, কোন কোন প্রভাবশালী নেতা দলীয় কর্মীদের মাধ্যমে চাকরি করিয়ে দেওয়ার সুপারিশপত্র পাঠাতেন। এসব জানতে জেলে গিয়ে শান্তনুকে জেরা করতে চান তদন্তকারীরা। 


বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু: স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় এখনও পর্যন্ত, ED-CBI-এর জালে ধরা পড়েছেন ২০ জনেরও বেশি। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতির আসল মাথা কে? কার সঙ্গে কার সরাসরি যোগাযোগ থাকত? কে কার কাছে দুর্নীতির টাকা পৌঁছে দিত? এই নিয়ে এক এক সময়, এক এক রকম দাবি করছেন ধৃতরা। এই প্রেক্ষাপটেই, ED দাবি করেছে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যর সঙ্গে সরাসরি যোগ ছিল বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের।


শুক্রবার শান্তনুকে আদালতে তোলার সময় রিমান্ড লেটারে, ED জানিয়েছে পার্থ ও মানিক, দু’জনের পৃষ্ঠপোষকতায় দুর্নীতির সাম্রাজ্য চালাতেন শান্তনু। চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা, কারা অগ্রাধিকার পাবে, কত টাকায় রফা হবে, তা ঠিক করার পাশাপাশি,এজেন্টদের সঙ্গেও সরাসরি যোগাযোগ রাখতেন শান্তনু। ১৮ মার্চ, বলাগ়ড়ের চাঁদরায় শান্তনুর গেস্ট হাউজে তল্লাশি চালিয়েছিল ED. তালা ভেঙে সেখানে ঢুকেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। এবার রিমান্ড লেটারে ED দাবি করল, চাঁদরায় ৪১ ডেসিমেল জমির উপর, ফার্ম হাউসের মালিকানা ইভান কোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের নামে দেখানো হয়েছে।


সেখানেই শান্তনুর ২৮ ডেসিমেল জমি আছে। এছাড়াও ED-র দাবি, ভুয়ো সংস্থা খুলেছিলেন শান্তনু। সেখানে ডামি ডিরেক্টর, অংশীদার ও কর্মীদের নিয়োগ করেছিলেন। তারপর নিয়োগ দুর্নীতির টাকায় তাঁদের নামে একাধিক সম্পত্তি কিনেছিলেন শান্তনু। চুঁচুড়ার ABS টাওয়ারে শান্তনু এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীল, দুজনেরই ফ্ল্যাট রয়েছে। শুক্রবার, ব্যাঙ্কশাল আদালত ৫ এপ্রিল পর্যন্ত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। 


রিমান্ড লেটারে ED জানিয়েছে, ২০১২-র টেট-এর অ্যাডমিট কার্ড সামনে রেখে জেরার সময় চূড়ান্ত অসহযোগিতা করেছেন শান্তনু। কোন কোন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, দলীয় কর্মীদের মাধ্যমে চাকরি করিয়ে দেওয়ার সুপারিশ তালিকা পাঠাতেন, তা জানতে চায় ED। তাই জেলে গিয়ে শান্তনুকে জেরা করতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।