বিজেন্দ্র সিংহ ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, নয়াদিল্লি : মানহানির মামলায় ২ বছরের কারাদণ্ডের জেরে রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সাংসদ পদ খারিজ হয়ে গেছে। ১০ বছর আগে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) এই সংক্রান্ত রায়ের বিরুদ্ধে অর্ডিন্য়ান্স আনার চেষ্টা করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং (Manmohan Singh)। কিন্তু, তখন সেই অর্ডিন্য়ান্স (Ordinance) ছিঁড়ে ফেলার কথা বলেছিলেন রাহুলই। এখন সেই রায়ের জেরেই তিনি সাংসদ পদ খোয়ালেন।
মানহানির মামলায় দোষী সাব্য়স্ত হয়েও জামিন পেয়েছেন। কিন্তু, ২ বছরের কারাদণ্ড হওয়ায় সাজার সঙ্গে সঙ্গেই, সাংসদ পদ খোয়াতে হয়েছে রাহুল গাঁধীকে ! এই প্রেক্ষাপটে অনেকে বলছেন, আজকের এই অস্বস্তি থেকে রাহুল গাঁধীকে বাঁচাতে পারতেন একজনই ! স্বয়ং রাহুল গাঁধী। কেন ? সেটা বুঝতে হলে ফিরে যেতে হবে ১০টা বছর পিছনে। যখন দোষী সাব্য়স্ত জনপ্রতিনিধিদের রক্ষাকবচ দিতে, অধ্য়াদেশ আনতে চেয়েছিলেন, তৎকালীন দ্বিতীয় UPA সরকারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। কিন্তু, তার পথে কার্যত বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রাহুল গাঁধীই !
কী ছিল আগের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে ?
জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে আগে বলা ছিল, সাংসদ-বিধায়ক দোষী সাব্যস্ত হলে তাতে স্থগিতাদেশ পাওয়ার জন্য তিন মাস সময় পাবেন।
২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় সরকার বনাম লিলি টমাস মামলায় আইনের সেই ধারাটি নাকচ করে, সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, ২ বছরের কারাদণ্ডের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেই সাংসদ পদ চলে যাবে। এরপরই পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে দোষী সাব্য়স্ত হন লালু প্রসাদ।
যিনি সেই সময় UPA-র শরিক ছিলেন। তাঁর সাংসদ পদ বাঁচাতে মনমোহন সিংহের সরকার অধ্যাদেশ জারি করে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বদলে পুরনো ব্যবস্থা বহাল রাখার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, তার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। ২০১৩ সালে একেবারে সাংবাদিক বৈঠক করে, সেই অধ্য়াদেশ ছিঁড়ে ফেলে দেওয়ার কথা বলেন রাহুল গাঁধী !
তাঁর এই মন্তব্য়ের পরই, দোষী সাব্য়স্ত জনপ্রতিনিধিদের রক্ষাকবচ দেওয়ার সেই অধ্য়াদেশ ফিরিয়ে নিয়েছিল ইউপিএ সরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেদিন রাহুল যে অধ্য়াদেশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন, তা না থাকাতেই, এখন রাহুল গাঁধীকে এত দ্রুত সাংসদ পদ খোয়াতে হল ! এই পরিস্থিতিতে রাহুল গাঁধীকে ৩০ দিনের মধ্য়ে উচ্চতর আদালতে আবেদনের অনুমতি দিয়েছে আদালত। তবে সেই অবধি আপাতত আর সাংসদ নন তিনি।
আরও পড়ুন ; রাহুল-প্রশ্নে নিশানায় বিজেপি! একসুর মমতা-অখিলেশ-বিমানের