প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: গরুপাচার মামলায় (Cattle Smuggling) অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের (Sukanya Mondal) বিরুদ্ধে আজ রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে (Rouse Avenue Court) ইডি-র হাতিয়ার হতে চলেছে তাঁর ও তাঁর বাবার ঘনিষ্ঠদের বয়ানই। ইডি-র দাবি, আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল ছিলেন সুকন্যা। শুধু তাই নয়। কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্তকারীদের দাবি মানলে, আর্থিক লেনদেনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন অনুব্রত-কন্যা।
কী দাবি ইডির?
ইডি-র দাবি, তদন্তে দেড়শো-দু’শো ব্যাঙ্কে নগদ জমার রসিদ মিলেছে। টাকার অঙ্ক ছিল ১০ কোটির বেশি যা নগদে জমা পড়েছে। আরও জানা যায়, অনুব্রতর পরিচারক, রাঁধুনি, সুকন্যার গাড়ি চালকরা বিভিন্ন সময়ে ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা জমা করেছেন। কে টাকা পাঠিয়েছে জানতে চাইলে তাঁরাই সুকন্যার নাম করেন। ইডি সূত্রের খবর, তথ্যপ্রমাণ দেখালেও সুকন্য়া জবাব এড়িয়েছেন। বারবার দাবি করেন, এই ব্যাপারে বাবা অর্থাৎ অনুব্রত মণ্ডল আর তাঁদের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারিই সব জানেন। যদিও সুকন্যার দাবি যে ঠিক নয়, তা ধরা পড়েছে অনুব্রত-ঘনিষ্ঠদের কথা থেকে। গত কালও বাবার দিকেই দায় ঠেলায় সুকন্যাকে গ্রেফতার করা হয় বলে ইডি সূত্রে খবর। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, শুধু অনুব্রত নন, সুকন্যাও নির্দেশ দিতেন। রাইস মিল ও অন্যান্য ক্ষেত্রে টাকা লেনদেনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন সুকন্যা। কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি, জায়গা-জমি ছাড়াও ব্যাঙ্কে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের কোনও সদুত্তর তিনি দেননি। আজ রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে এই সমস্ত তথ্যপ্রমাণ পেশ করে অনুব্রত-কন্যাকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
'ফলস কেস', বললেন অনুব্রত
এদিকে বৃহস্পতিবার গরুপাচারকাণ্ডে সিবিআই-এর দায়ের করা মামলাকে 'ফলস কেস' বলেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। জামিন দেওয়ার জন্য বিচারকের কাছে আর্জিও জানান বীরভূমে তৃণমূলের (TMC) সভাপতির। সঙ্গে বলেন, "শরীর ভাল নেই। আসানসোলে ফিরিয়ে দিন আমাকে।" এদিন দিল্লিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানি চলছিল। তিহাড় জেল থেকে সেই শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত এবং তাঁর দেহরক্ষী হিসেবে একসময় কাজ করা সায়গল হোসেন। শুনানি চলাকালীন প্রথমে অনুব্রতকেই প্রশ্ন করেন বিচারক। কেমন আছেন জানতে চাইলে অনুব্রত বলেন, "আমার শরীর ভাল নেই।" আসানসোল জেলে ফিরতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন অনুব্রত। সেই আবেদনের কী অবস্থা জানতে চান বিচারক। তাতে অনুব্রত জানান, মামলা চলছে। বিচারক মনে করলে তাঁকে আসানসোল জেলে ফিরিয়ে দিতে পারেন। এর পরই বিস্ফোরক দাবি করেন অনুব্রত। সিবিআই-কে কাঠগড়ায় তুলে বলেন, "এমনিতে সব ঠিক আছে। কিন্তু সব মামলা মিথ্যা। আমাকে জামিন দিন।" সিবিআই-এর বিরুদ্ধে অনুব্রতর এই অভিযোগ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, বিশেষত গতকালই যখন গরুপাচার মামলার তদন্তে অনুব্রত-কন্যা সুকন্যাকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।