পার্থপ্রতিম ঘোষ, ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: গার্ডেনরিচ কাণ্ডে পুলিশের পরে এবার প্রায় ১৩ কোটি টাকার ক্রিপ্টোকারেন্সি উদ্ধার করল ইডি। বুধবার আমিরের  প্রতারণার শিকড়ের খোঁজে ৩ জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। অন্যদিকে ৫টি জায়গায় তল্লাশি চালায় কলকাতা পুলিশ। গ্রেফতার ৪। 


ইডি ছুটছে। পুলিশ দৌড়চ্ছে। উদ্দেশ্য গার্ডেনরিচের সেই কীর্তিমান আমির খানের আরও কীর্তি ফাঁস করা! ই-নাগেটস গেমিং অ্যাপ প্রতারণায় টাকা শুধু টাকাই উদ্ধার হয়ে চলেছে! ১০ সেপ্টেম্বর ইডির অভিযানে আমিরের বাড়ির খাটের নীচ ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে ED! এরপর আমির ধরা পড়ার পর আরও ১৪ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকার ক্রিপ্টোকারেন্সির হদিশ পায় কলকাতা পুলিশ! 


আর বুধবার ১২ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকার ক্রিপ্টোকারেন্সির খোঁজ পেল ED। আমিরের আমিরির আরও কত নমুনা আছে? তারই খোঁজে বুধবার আরও ৫টি জায়গায় অভিযান চালায় কলকাতা পুলিশ। তার মধ্যে ই-নাগেটস্-অ্যাপের যোগসূত্রে, এদিন বিকেলে সেক্টর ফাইভে, ক্যুইক ব্লক-ই-কমার্স নামে এক সংস্থার অফিসে হানা দেয় পুলিশ। 

সেখানে ঢুকেই চোখ কপালে ওঠে অফিসারদের। দেখা যাচ্ছে, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সেগুলির সার্ভার - সব চলছে! অথচ একটিও লোক নেই! 
অফিসে তল্লাশি চালিয়ে ৩ হাজারের বেশি ডেবিট কার্ড ৪৮৩টি ব্যাঙ্ক কিট উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়াও ১৯৫২টি সিম কার্ড উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। 


পুলিশ সূত্রের খবর, এই অফিসে কাউকে না পাওয়া গেলেও, প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে জানা গেছে, বিদেশে বসে এই অফিসের সার্ভার নিয়ন্ত্রণ করা হত
এদিকে, আমির-কানেকশনে দিনভর তল্লাশি চালিয়ে, বিভিন্ন ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। তাদের জেরা করে প্রতারণা চক্রের আরও গভীরে যেতে চাইছেন তদন্তকারীরা।


অন্যদিকে, বুধবারই আমিরের প্রতারণার শিকড়ের খোঁজে বেহালা ও বি কে পাল অ্যাভিনিউ-সহ মোট ৩ জায়গায় অভিযান চালায় ইডি। দুপুর দেড়টার পরে ED’র একটি টিম পৌঁছয় এক বস্ত্র ব্যবসায়ীর বাড়িতে। সূত্রের খবর, তাঁর ছোট ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডির অফিসারেরা। শুভজিৎ শ্রীমানির ক্রিপ্টো অ্যাকাউন্ট থেকেই প্রায় ১৩ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি।


অভিযোগ, নামে-বেনামে ক্রিপ্টো অ্যাকাউন্ট খুলে বিপুল অর্থের লেনদেন করতেন আমির। সেই সূত্রেই বেহালার চণ্ডীতলায় সোমা নস্কর নামে একজনের বাড়িতেও পৌঁছন ইডির অফিসারেরা। ইডি সূত্রে দাবি, আমিরের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগসূত্র ছিল সোমার। তবে আমির খানের বাড়ি থেকে ইডি টাকার পাহাড় উদ্ধার করার পর, এখন কলকাতা পুলিশ তৎপর হলেও, প্রায় দেড় বছর আগে ফেডেরাল ব্যাঙ্ক যখন আমিরের অভিযোগ দায়ের করেছিল, তখন পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেই অভিযোগ।