কলকাতা : শাসকের সঙ্গে আপসহীন সংঘাতের রাস্তায় হেঁটে, শিরদাঁড়া সোজা রেখে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসেই নেওয়া হয়েছে পরীক্ষা। আর এরপরেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নিশানায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে আক্রমণ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "উচ্চশিক্ষা দফতর বা সরকারের দিকে তাকিয়ে কর্তাভজা যদি কেউ হন, তাহলে সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বশাসনের পক্ষে যেমন ক্ষতিকারক, তেমনি আচার্যের দাঁড়ে বাঁধা ময়না বা টুনটুনি যদি কেউ হন, সেটাও কোনও স্বশাসন নয়।"
ব্রাত্য বসুর কথায়, "সুপ্রিম কোর্টের চোখে আচার্য হিসাবে হওয়ারই যোগ্য নন। এটা আমরা আরও বুঝতে পারব যখন সুপ্রিম কোর্ট খুব শীঘ্র...এটার প্রক্রিয়া চলছে। আচার্য নির্বাচিত কতজন উপাচার্য মূল তালিকায় ঠাঁই পান সেটা থেকে বোঝা যাবে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কেন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য...আচার্য নিয়োজিত উপাচার্য...সুপ্রিম কোর্টের কাছে যোগ্য বলে বিবেচিত হননি। আমাকে একমাত্র রাখা হয়নি, সুপ্রিম কোর্টে হারার পরেও...এই যে একটা মিথ্যাচার চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে এটা ঠিক নয়। আমি আপনাদের সঙ্গে প্রিন্সিপ্যালি একমত যে, উচ্চশিক্ষা দফতর বা সরকারের দিকে তাকিয়ে কর্তাভজা যদি কেউ হন, তাহলে সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বশাসনের পক্ষে যেমন ক্ষতিকারক, তেমনি আচার্যের দাঁড়ে বাঁধা ময়না বা টুনটুনি যদি কেউ হন, সেটাও কোনও স্বশাসন নয়। দু'টোই খারাপ। উচ্চশিক্ষা দফতরের দিকে তাকিয়ে যদি কোনও উপাচার্য করেন, সেটা যেমন শিক্ষার পক্ষে খারাপ, আচার্যের দাঁড়ে বাঁধা টুনটুনি বা ময়নাও, তিনিও যদি বিশ্ববিদ্যালয়কে...যাওয়ার আগে যদি কিছু ঘোটালা করে পাবলিসিটি নেওয়ার চেষ্টা করেন, সেটাও খারাপ।"
পাল্টা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য বলেন, "আমার শিক্ষার মানটা অন্যরকম। একটা শিক্ষিত পরিবারে বড় হয়েছি। আমার শিক্ষার মানটা এতটাই...আমি শিক্ষাকে এতটাই মর্যাদা দিই যে, উনি যে খারাপ-ভাষাগুলো ব্যবহার করছেন, সেই ভাষার প্রত্যুত্তরে আমি অন্তত খারাপ-ভাষা ব্যবহার করব না। আমি শুধু ওঁকে এটুকুই বলতে চাই, বাংলার সংস্কৃতির একটা মর্যাদা আছে। বাংলার একটা মর্যাদা আছে। সেখানে শিক্ষামন্ত্রীকে সংযত হতে হয়। ভাষায় সংযত হতে হয়। রাজনৈতিক বিতর্ক থাকতেই পারে। হয়ত ওঁর অনেক রাগ আছে আমার উপর। পরীক্ষা হয়ে গেল, সেটাতেও ওঁর রাগ হয়েছে। পরীক্ষাটা হওয়াটা কেন জাস্টিফায়েড সবই আগে বলেছি। এটা নিয়ে এত প্রচার হবে, এতে লোকে হইচই করবে, এটা তো আমার কাছে অপ্রত্যাশিত। আমি তো ভাবিইনি এটা নিয়ে। কিন্তু, ওঁর হয়ত খুব রাগ হয়েছে। রাগ হতে পারে। আমার সঙ্গে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বও ওঁর থাকতে পারে। কিন্তু, তার জন্য এত নীচে নেমে যেতে হবে, এটা তো বাংলার সংস্কৃতি নয়।"
করে দেখিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্য়ালয়। শাসকের সঙ্গে আপসহীন সংঘাতের রাস্তায় হেঁটে, শিরদাঁড়া সোজা রেখে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসেই নেওয়া হয়েছে পরীক্ষা। ৯৬ শতাংশ পড়ুয়ার উপস্থিতিতে পরীক্ষা হয় নির্বিঘ্নেই। বৃহস্পতিবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮১ পরীক্ষাকেন্দ্রে ১৪ টি বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০ হাজার।