এগরা : এগরায় শুরু শুভেন্দু অধিকারীর মিছিল। ১৬ মে এগরার খাদিকুলে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর প্রতিবাদে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে আজ মিছিল হয়। সামিল হন প্রচুর সংখ্যক বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। এগরার সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়ে দিঘা মোড় পর্যন্ত কর্মসূচি নেওয়া হয়। এদিকে এগরা বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্তের নামে গ্রামবাসীকে হেনস্থা করার অভিযোগে এগরা থানায় শুভেন্দু। হেনস্থা বন্ধ না হলে এগরা থানা ঘেরাওয়ের হুঙ্কার দিন তিনি। 


এগরার খাদিকুল গ্রামে এখনও কান পাতলে শুনতে পাওয়া যায়, স্বজন হারাদের কান্না ! গ্রামে আকাশে ঘনীভূত বিষাদের মেঘ। বাতাসে, এখনও পোড়া মৃতদেহের গন্ধ ! গত মঙ্গলবার, কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু বাগের বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখানেই, প্রশ্ন উঠছে, কী করে এতদিন ধরে বেআইনি বাজি তৈরির কারবার চালাচ্ছিলেন ভানু ?


একের পর এক মৃত্যু ! ছিন্নভিন্ন শরীর ! প্রাণে বাঁচার আকুতি ! মেরুদণ্ড দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দেওয়া এগরা বিস্ফোরণকাণ্ডে উঠেছে ভয়াবহ অভিযোগ ! স্বজনহারা পরিবারের সদস্যদের একাংশের দাবি, আগুনে পোড়ার তীব্র জ্বালা নিয়ে ভানুর বিধ্বস্ত কারখানার বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন কয়েকজন। অভিযোগ, সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকা সেই মানুষগুলোকেই বাঁশ দিয়ে ঠেলে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল !


নিহত অলোক মাইতির বাবা গৌরাঙ্গ মাইতি বলেন, 'আমি যখন দৌড়ে যাই তখন দেখি আগুনটা কমেছে। দেখি কালী বাগ, প্রসেনজিৎ বাগ, দু-চারজন বাঁচতে পারত, প্রমাণ লোপাটের জন্য জলে ফেলে দিয়েছে। দেখি, বাঁশ দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ফেলছে। ও খুন করেছে। তারপর আমরা চিৎকার করে বলি, কী করছিস! তখন ও পালিয়ে যায়!'


বিস্ফোরক এই অভিযোগ করছেন গৌরাঙ্গ মাইতি। বিস্ফোরণে যিনি নিজের ছেলে এবং দাদা-কে হারিয়েছেন ! অভিযোগের আঙুল ভানু বাগের মেজো ভাইয়ের বড় ছেলে প্রসেনজিৎ বাগের বিরুদ্ধে! প্রশ্ন উঠছে, প্রসেনজিৎ কেন বিস্ফোরণকাণ্ডে দগ্ধ কয়েকজনকে পুকুরে ফেলে দিতে যাবেন ? তাহলে কি প্রমাণের লোপাটের ছক ছিল ?


এই উত্তরের খোঁজে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে প্রসেনজিত বাগের ভূমিকা। চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, ঘটনার পর থেকে তাঁর যেমন খোঁজ মিলছে না, তেমনই হদিশ নেই প্রসেনজিতের ভাই চিরঞ্জিতেরও ! সিআইডি সূত্রেই খবর, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাকা ভানুর বাজি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন চিরঞ্জিৎ। তিনি নিজেও এই বিস্ফোরণে গুরুতর আহত। 


আর এসবের মধ্যেই ফের পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ! স্থানীয় নেগুয়া পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব ১০ কিমি।
আর এগরা থানা থেকে দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সব জানত পুলিশ।