কলকাতা: দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে ফের খোঁজ মিলল বাংলাদেশি ভোটারের। কাকদ্বীপের ভোটার আবার বাংলাদেশের কোটা বিরোধী আন্দোলনের মুখও। আন্দোলনের সময়ে ঘটনাস্থলে তাঁর উপস্থিত থাকার একাধিক ছবি রয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। অভিযুক্ত নিউটন দাস একসঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশের ভোটার বলে স্বীকার করে নিয়েছেন তাঁর দাদা। নিউটন দাসের কাকদ্বীপের ভোটার তালিকায় নাম থাকা নিয়ে এবার বিস্তারিত রিপোর্ট চাইল জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
ক'দিন আগেই ভোটার তালিকায় অনিয়মের অভিযোগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের সহকারী সিস্টেম ম্য়ানেজারকে সাসপেন্ড করেছে মুখ্য় নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। এবার সেই কাকদ্বীপেই ফের ভোটার তালিকায় নাম পাওয়া গেল বাংলাদেশের নাগরিকের। ফের ভারতের ভোটার তালিকায় ঢুকে পড়ল ওপার বাংলার নাগরিকের নাম। এই অভিযোগ সামনে আসতেই এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের কাছে এবিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চাইল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত জানিয়েছেন, "নিউটন দাসের ভোটারকার্ড সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে সেই তথ্য যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত রিপোর্ট দেওয়া হবে।''
কাকদ্বীপের স্বামী বিবেকানন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের সুভাষনগর এলাকায় বছরের পর বছর ধরে দাদার বাড়িতে থাকতেন নিউটন দাস। নামখানার একটি সরকারি স্কুলে একসময় পড়াশুনাও করেছেন। বাংলাদেশ থেকে হামেশাই যাতায়াত ছিল। করোনার সময়ের পরও কাকদ্বীপে দাদার বাড়িতে এসে ছিলেন। নিউটন যে বাংলাদেশের ভোটার, তা স্বীকার করে নিয়েছেন তাঁর দাদা। এখন অবশ্য বাংলাদেশেই রয়েছেন নিউটন দাস। সামনে এসেছে তাঁর একটি ভাইরাল ভিডিও। কয়েকদিন আগেই, কাকদ্বীপের ভোটার তালিকায় বাংলাদেশিদের নাম ওঠা নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন কাকদ্বীপেরই তৃণমূল বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওয় চাঞ্চল্যকর দাবিও করেছেন নিউটন নিজেই। তিনি বলেন, "আমি নিউটন দাস, আমি কাকদ্বীপের বাসিন্দা। আমি আমার পূর্বপুরুষদের জায়গা সংক্রান্ত বিষয়ের কারণে, যেহেতু আমি ওয়ারিশ হই, ২০২৪ সালে আমাকে একবার বাংলাদেশে আসতে হয়। এসেই আমি জুলাই বিপ্লবের মুখে পড়ে যাই। ২০১৬ সালে আমি কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরাকে ভোট দিয়েছিলাম। কিন্তু ২০১৭ সালে আমার ভোটার কার্ডটি হারিয়ে যায়। তখন ২০১৮ সালে আমি আবার আমাদের বিধায়কের সহযোগিতা নিয়ে আমি আবার আমার কার্ডটি তুলি।''
এই নিউটন দাসের সঙ্গেই আবার স্পষ্ট হয়েছে এরাজ্যের শাসকদলের যোগ। ছবিতে তাঁর সঙ্গে দেখা গেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস দাসকে। এমনকী, নিউটনের জন্মদিনে দুজনকে একসঙ্গে কেক কাটতেও দেখা গেছে। দেবাশিস দাস বলেন, "২০০০ সালে আমার সাথে দেবনগরে পড়ত। কার ভোটার কার্ড হয়েছে কী হয়েছে জানি না। আমার নিজেরই বয়স তখন ১০-১২ বছর হয়ত। আমার বন্ধু ছিল। ২০২২ সালে হঠাৎ দেখা হল ২১-২২ সালে, তার জন্মদিনে একদিন কেক কাটা হল।''