সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। গ্রেফতারির ৫৯ দিনের মাথায় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর (Sujay Krishna Bhadra) বিরুদ্ধে ১২৬ পাতার চার্জশিট জমা করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আর এবার 'কালীঘাটের কাকু'র (Kalighater Kaku) অসুস্থতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate)। পাশাপাশি এসএসকেএম হাসপাতালের (SSKM Hospital) ভূমিকা নিয়েও তারা প্রশ্ন তোলে।


দিনকয়েক আগে হাসপাতাল থেকেই ইডি-র বিশেষ আদালতে জামিনের আবেদন জানান কালীঘাটের কাকু সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তিনি আর্জি জানান, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ৩টি ধমনীতে ব্লকেজ রয়েছে। বাইপাস সার্জারি করাতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চেয়ে জামিন মঞ্জুরের আবেদন জানান কালীঘাটের কাকু।


সেই প্রসঙ্গে আজ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা প্রশ্ন তোলে, বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে কেন ? এ প্রসঙ্গেই ইডি আদালতে সওয়াল করে, 'এসএসকেএম হাসপাতালের রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল মারাত্মক অসুস্থ পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আদালতের নির্দেশেই তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে ভুবনেশ্বর এইমসে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু, দেখা যায় তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ।' তখন আদালত জানতে চায়, 'তিনি (সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র) কি আগে সেখানে চিকিৎসা করিয়েছেন বা তাঁর চিকিৎসক সেখানে বসেন? ইডি প্রশ্ন তোলে, এসএসকেএমে তো এখন হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনও হয়। সেই হাসপাতালের ওপর ভরসা রাখছেন না সুজয়কৃষ্ণ ? এটা জামিন নেওয়ার একটা কৌশল।'


প্রসঙ্গত, দিন চারেক আগে গ্রেফতারির ৫৯ দিনের মাথায় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। নিয়োগ দুর্নীতিতে মিলেছে ২০ কোটি টাকা লেনদেনের প্রমাণ, ১২৬ পাতার চার্জশিটে দাবি করে তদন্তকারী সংস্থার। চার্জশিটে নাম রয়েছে ওয়েলথ উইজার্ড প্রাইভেট লিমিটেড এবং এসডি কনসালটেন্সির। সাড়ে ৭ হাজার পাতার তথ্য প্রমাণ ও নথি জমা দেওয়া হয়েছে চার্জশিটের সঙ্গে।


সূত্রের খবর, চার্টশিটের ৭৫-তম পাতায় দাবি করা হয়, তৃণমূল যুব কংগ্রেসের তৎকালীন সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্থিক বিষয়গুলি দেখাশোনা করতেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। আরও বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের অফিসে মাঝেমধ্যেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা নিয়ে যেতেন এই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। 


এদিকে নিম্ন আদালত নির্দেশ দেয় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের চিকিৎসা করাতে হবে এসএসকেএম হাসপাতালেই, সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন 'কালীঘাটের কাকু'। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা এবং অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন জানান তিনি। মামলা দায়েরের অনুমতি দেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। সে প্রসঙ্গেই আজ ইডির সওয়ালে উঠে আসে এসএসকেএম প্রসঙ্গ।