কলকাতা : টেটের তথ্য চেয়ে এবার পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সচিবকে তলব ইডি-র। টেটের প্যানেল সংক্রান্ত নথি ও তথ্য নিয়ে হাজিরার নির্দেশ। '২০১৪-তে অতিরিক্ত নিয়োগ নিয়ে তথ্য চেয়েছে ইডি। বেশিরভাগ তথ্যই আগে সিবিআইকে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে তদন্তও করছে সিবিআই', জানালেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। আজ পর্ষদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি যাবেন ইডি দফতরে, জানান তিনি। গৌতম পাল বলেন, সচিবের পদ এই মুহূর্তে ফাঁকা। তাঁর পরিবর্তে একজন আধিকারিক যাবেন।


নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাপস মণ্ডল-সহ অন্যান্যদের নিয়ে আদালতে একের পর এক দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (CBI)। '২০১৪-র প্রাথমিকে নিয়োগ-দুর্নীতিতে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাপস মণ্ডলের। বিপুল টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি দিতে বড় ভূমিকা ছিল তাপসের। সেই টাকার ভাগ পৌঁছেছে কুন্তল ঘোষ ও অন্যান্য প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের কাছে', তাপস মণ্ডল ও অন্যান্যদের জেরায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য, আদালতে দাবি করে সিবিআই। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আরও দাবি, 'তাপস ও অন্যান্য অভিযুক্তদের মুখোমুখি জেরায় বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের প্রমাণ মিলেছে'। 


CBI সূত্রে দাবি করা হয়, মূলত ৩টি কারণে গ্রেফতার হয় মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপসকে। প্রথমত, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ তাপস। তিনি যে টাকা নিয়েছেন এবং দিয়েছেন, তা যে বেআইনি কাজের জন্য, সেটা জেনেবুঝেই করেছেন। দ্বিতীয়ত, টাকা লেনদেনের হ্যান্ডলার হিসেবে কাজ করেছেন মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস। তৃতীয়ত, সূত্রের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ যে অডিও ক্লিপ CBI-এর হাতে তুলে দিয়েছেন, তাতে তাপসকে বলতে শোনা যায়, ৫০ লক্ষ টাকা দিলে তিনি CBI বা ইডি-র কাছে মুখ খুলবেন না।


'নিয়োগ দুর্নীতি'-র (Reqruitment Scam) মধ্যেই সম্প্রতি প্রাথমিক টেটের ফল (Primary TET) প্রকাশ হয়। বিকাশভবনে সাংবাদিক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) বলেন, বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থীকে ভরসা দিতে পর্ষদ একাধিক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে সচেষ্ট রাজ্য সরকার।' 


কুন্তলের প্রসঙ্গও ওঠে সাংবাদিক বৈঠকে। কিছুদিন আগেই কুন্তল ঘোষের বাড়ি থেকে ওমআরশিট পাওয়া যায়। এনিয়ে ব্রাত্য বসু বলেন, 'এখানে খুব ভাল করে ব্যাপারটা বুঝতে হবে আপনাদের। পর্ষদ পরীক্ষা নিয়েছে , আপনি পরীক্ষা দিয়েছেন। পর্ষদের কাছে একটা কপি আছে, আপনি পরীক্ষার্থী আপনার কাছে একটা কপি আছে।  আপনি যদি সেই কপি দেন, কোনও দালাল বা দুষ্ট চক্রকে, তার দায় সরকারের নয় পর্ষদেরও নয়। কোনও দালালের ফাঁদে যদি পা দেন, তাহলে আপনারও সম অপরাধ। আপনি কোনও রকম এমন প্ররোচনায় পা দেবেন না। আপনি কেবলমাত্র নিজের শ্রমের উপর আস্থা রাখুন। কোনও রকম কোনও ছিদ্র, কোনওরকম কালনাগিনী ঢোকার উপায় নেই। লখিন্দরের বাসরঘরের মতো, ত্রুটি সামলে পর্ষদ পরীক্ষাটি নিয়েছে।'