কলকাতা: আন্দোলনের ৮০ ঘণ্টা, অনশনের ৫৭ ঘণ্টা পার, অনড় আন্দোলনকারীরা (Protestors)। হাইকোর্টের নির্দেশের পরেই করুণাময়ীতে পুলিশি তৎপরতা তুঙ্গে। আন্দোলনকারীদের দ্রুত এলাকা ছাড়তে মাইকে হুঁশিয়ারি। হুঁশিয়ারির মুখেও অনড় আন্দোলনকারীরা, একের পর এক অসুস্থ। চাকরির দাবিতে আন্দোলনে অনড় ’১৪-র টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা। করুণাময়ীতে ৪দিনে অনশন আন্দোলনে ২০১৪-টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা। নিজেদের দাবিতে অনড় ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা। পুলিশের হুঁশিয়ারির পরেও আন্দোলন তুলে নিতে অস্বীকার চাকরিপ্রার্থীদের।
এদিন হাইকোর্টের নির্দেশের পরই সেই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ফলে আন্দোলনকারীরা আলাদা আলাদা করে ছোট ছোট ভাগে ভাগ হয়ে অবস্থান করছেন। মানববন্ধন করে আন্দোলনে নিজেদের অবস্থান নিয়ে অটুট রয়েছেন আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে যাওয়া আন্দোলনকারীদের পুলিশের তরফে অ্যাম্বুলান্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় বিধাননগর হাসপাতালে। হাজারো প্রতিকূলতা আসলেও কোনওভাবেই আন্দোলন ছেড়ে উঠবেন না বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। যতক্ষণ না নিয়োগ করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন উঠবে না, এমনই জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
এদিন, সন্ধে হতেই শুরু হয় পুলিশের (Police) মাইকে প্রচার। বিশাল পুলিশবাহিনীতে ছয়লাপ হয়ে যায় করুণাময়ী চত্বর। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ বলবৎ করতে যে তারা পদক্ষেপ করতে চলেছেন, বুঝিয়ে বারবার নরমে-গরমে প্রচার চালানো হতে থাকে পুলিশের পক্ষ থেকে।
পুলিশের সংখ্যা বাড়ার মতোই একজোট হয়ে তীব্র প্রতিরোধের সুর আরও জোরালো করতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। একদৃষ্টে পুলিশের মাইকে প্রচার দেখা-শোনার পর আন্দোলন প্রত্যাহার হবে কি না জানতে চাইলে ১৪-র টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের বক্তব্য, 'মারতে এল মার খাব। হয় পুলিশের মারে মরব, নয়তো না খেয়ে। তবে নিজেদের দাবি থেকে আমরা একচুলও নড়ব না। চাকরি না পেয়ে আমরা এক চুলও নড়ব না।' অপর এক চাকরিপ্রার্থীর কথায়, 'এতদিন ধরে ন্যায্য চাকরি পাওয়ার জন্য কিছু করতেই তো বাকি রাখিনি আমরা। সবটা দিয়ে লড়াই করার পরও সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে দেখেই তো এই চূড়ান্ত পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছি।'
করুণাময়ীতে টানা চারদিন ধরে চলছে ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান-ধর্না। যার মধ্যে টানা তিনদিন নির্জলা অনশন চলছে তাঁদের। গত দিন দুয়েকে একের পর এক চাকরিপ্রার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদিন সন্ধেতেও পুলিশি তৎপরতা বাড়ার পরও বেশ কয়েকজন শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করেন। তাঁদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আশা হলেও তাঁরা অনশন তুলে অবস্থান মঞ্চ ছেড়ে যেতে চাননি। যারপরই কড়া সুরে পুলিশ জানায়, শারীরিকভাবে কোনও কিছু হলে তাঁর জন্য কিন্তু তাঁরা দায়ী থাকবেন না। যারপরই আলোচনার মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীরা নিজেদের মধ্যে ফের আলোচনা করে অসুস্থদের বুঝিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে হাসপাতালে পাঠানোর দিকটা নিশ্চিত করেন।