কলকাতা : সিঙ্গুর থেকে টাটার বিদায় নিয়ে ফের মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চড়া সুরে আক্রমণ শানালেন সিপিএমকে। শিলিগুড়ির বিজয়া সম্মিলনীর সুরেই কলকাতায় কালীপুজোর উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘কেউ কেউ বলে বেড়াচ্ছে, টাটা কেন বাংলার ছেলেমেদের চাকরি দেবে? বিজেপি-সিপিএম এটা বলে বেড়াচ্ছে, আমরা কখনও কাউকে আলাদা করে দেখিনি। আমাদের এখানে যারা বিনিয়োগ করেছে, তাদের সবাইকে স্বাগত।' তাঁর সরকার যাতে জোর করে জমি অধিগ্রহণ না করে সে ব্যাপারে তিনি নিজে সবসময় বাড়তি উদ্যোগ নিয়ে বিষয়টা দেখেন বলেও দাবি মুখ্যমন্ত্রীর।
টাটা গোষ্ঠী-সিপিএমকে আক্রমণ
সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানা না হওয়ার জন্য শিলিগুড়ি থেকে সিপিএমকে দায়ী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। একধাপ এগিয়ে কলকাতার মঞ্চ থেকে তাঁর ঝাঁঝালো আক্রমণ, ‘জোর করে কৃষকদের জমি কেড়েছেন, তাপসী মালিককে পুড়িয়ে মেরেছেন’। পাশাপাশি সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানার বিদায় নিয়ে বামেদের সঙ্গে টাটাকেও আক্রমণে মমতা। তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগ, ‘আপনাদের ভোট দেওয়ার জন্য টাটারা আমাদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল’।
টাটা-বিদায়ের রাজনীতি
যে সিঙ্গুর আন্দোলন রাজ্য রাজনীতির মোড় ঘুরে দিয়েছে। যে সিঙ্গুর একসময় বাংলার শিল্প-সম্ভাবনার প্রতীক হয়ে উঠতে উঠতেও শেষ অবধি শিল্পের সমাধি ঘটেছে। লাগাতার আন্দোলনের জেরে টাটাদের গাড়ি কারখানা তৈরি প্রায় শেষ হতে হতেও শেষ হয়নি, উল্টে শিল্পই শেষ হয়ে গেছে। সিঙ্গুর ন্যানো কারখানা না হওয়া নিয়ে সিপিএমকে দায়ী করলেও ২০০৮ সালে তৎকালীন টাটা কর্ণধার রতন টাটা কারখানার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানানোর দিন বলেছিলেন, 'দু’বছর আগে একবার আমি বলেছিলাম, কেউ আমার মাথায় বন্দুর ঠেকালে, হয় সে গুলি চালাবে নয়তো বন্দুক সরিয়ে নেবে, কিন্তু আমি আমার মাথা সরাবো না। আমার মনে হয় মিস ব্যানার্জি ট্রিগারটা টেনেই দিয়েছেন।'
কী অবস্থায় সিঙ্গুর
যেখানে তৈরি হওয়ার কথা ছিল বিশাল গাড়ি কারখানা, এখন সেখানে কোথাও ধান চাষ, কোথাও সবজি, কোথাও জলাশয় আর কোথাও শুধুই বিঘের পর বিঘে শুধুই জঙ্গল। মাস কয়েক আগে সিঙ্গুরে দাঁড়িয়ে শিল্পের বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রির জন্য বোঢ়াই পহলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৮ একর খাস জমি নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তা ডেভেলপমেন্টের কাজ চলছে।