কলকাতা: সারা দেশে গুণমানের পরীক্ষায় গত এক বছরে ফেল করেছে প্রায় ১ হাজারটি ওষুধ (Fake Medicine Alert)। তার মধ্যে রয়েছে কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবে ফেল করা ৩১২টি নমুনা। কীভাবে চিনবেন এই ভেজাল ওষুধ?
CDSCO সূত্রে খবর, একটি ওষুধ জাল বলে গণ্য করা হবে, যদি তা কোনও ওষুধের নাম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। যদি তা অন্য ওষুধের নকল হয় বা অন্য ওষুধের সঙ্গে এতটাই সাদৃশ্যপূর্ণ হয়, যাতে প্রতারণার আশঙ্কা থাকে। যদি ওষুধের চরিত্র সম্পর্কে বিবরণে স্পষ্টতার অভাব থাকে। ওষুধের লেবেল বা কন্টেনারে প্রস্তুতকারক হিসেবে এমন কোনও ব্যক্তি বা কোম্পানির নাম থাকে যাদের কোনও অস্তিত্বই নেই। যদি কোনও ওষুধের মধ্যে অন্য ওষুধ ঢোকানো থাকে তাকে জাল ওষুধ বা স্পিউরিয়াস ড্রাগ বলে চিহ্নিত করা হবে।
এই জাল ওষুধ নিয়েও চিন্তা বাড়িয়েছে CDSCO-র রিপোর্ট। কারণ, গত এক বছরে কলকাতায় ধরা পড়েছে অসংখ্য জাল ওষুধ। CDSCO সূত্রে খবর, গত বছর নভেম্বরে কলকাতায় ধরা পড়ে নামী সংস্থার ব্র্যান্ড এবং ব্যাচ নম্বর জাল করে তৈরি কোলেস্টেরলের ওষুধ। অক্টোবরে ধরা পড়ে নামী সংস্থার জাল ভিটামিন ডি3 ট্যাবলেট সেপ্টেম্বরে ধরা পড়ে, জাল অ্যান্টিবায়োটিক, প্যানটোপ্রাজল D, প্যারাসিটামল। জুন মাসে কলকাতা থেকে ধরা পড়ে নকল অ্যান্টিবায়োটিক, ইনহেলার, কাফ সিরাপ। মার্চ মাসে কলকাতা থেকে বাজেয়াপ্ত হয় সান ফারমা এবং glenmark-এর নাম জাল করে বানানো স্নায়ু এবং হৃদরোগের ওষুধ।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ৩৫টি ওষুধ ফেল করেছে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোলের পরীক্ষায়। সব থেকে উদ্বেগের বিষয়, তার মধ্যে রয়েছে সরকারি হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা নমুনাও। CDSCO সূত্রে খবর, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি NRS মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্টোরে থাকা Pulmosil ইঞ্জেকশন। যে ইঞ্জেকশন ব্যবহার করা হয় হৃদযন্ত্র এবং ফুসফুসের সমস্যায় চিকিৎসাধীন রোগীদের রক্তচাপ কমাতে। CDSCO-র রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, NRS হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা ওষুধটি ছিল sun pharma-র মোড়ক নকল করে বানানো। ভায়ালে লেখা ছিল ব্যাচ নম্বর থেকে ইঞ্জেকশন তৈরির তারিখ এবং এক্সপায়ারি ডেট। পরীক্ষায় ফেল করার কারণ হিসেবে রিপোর্টে লেখা রয়েছে, ভায়ালে ছিল দূষিত পদার্থ। সমস্যা ছিল শুদ্ধতার।
ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা সান ফারমার তরফে জানানো হয়েছে, এই ইঞ্জেকশন তাদের তৈরি নয়। এটি স্পিউরিয়াস ড্রাগ বা জাল ওষুধ। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। কিন্তু এরকম ইঞ্জেকশন NRS-এর মতো সরকারি হাসপাতালে স্টোরে এল কী করে? তাহলে কি সরকারি হাসপাতালেও ঢুকে পড়ছে নিম্নমানের বা জাল ওষুধ? NRS হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই ওষুধটি নজরে আসা মাত্রই ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দিরা দে পাল বলেন, "আমরা জানার পরই ওই ওষুধ ব্যবহার বন্ধ করে দিই। লোকালি কেনা হয়েছিল। কিন্তু কাউকে দেওয়ার আগেই বিষয়টি নজরে আসে।''
আরও পড়ুন: Shantiniketan Dol Yatra: : দোলে জমজমাট ভিড়, রঙের উৎসবে মেতেছে শান্তিনিকেতন