পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : পাসপোর্ট জালিয়াতি কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন অন্যতম মাথা মনোজ গুপ্ত। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন তিনি, জানিয়েছেন ধৃতের মা। ছেলে যে বেআইনি কাজ করে, তা শুনেছিলেন আশপাশ থেকে। বারংবার এই কাজ ছেড়ে বাবার দোকান দেখার কথাও বলতেন ছেলেকে। তবে কোনও কথাতেই পাত্ত দেননি মনোজ গুপ্ত। বরং বন্ধুবান্ধবের নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছিলেন জাল নথি দিয়ে ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরির কাজ। তবে ছেলেকে বাড়িতে কোনওদিনই এসব কাজ করতে দেননি বলেই জানিয়েছেন পাসপোর্ট জালিয়াতি কাণ্ডে ধৃত মনোজের মা। লালবাজার গোয়েন্দা সূত্রে খবর, জাল পাসপোর্ট চক্রের কিংপিন এই মনোজ গুপ্ত। এর আগে যখন বেহালার শীলপাড়ায় তাঁর বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালাতে যায় তখন পলাতক ছিলেন তিনি। বাড়িতে, তাঁর ঘরে তল্লাশি চালিয়েও বিশেষ কিছু তখন উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। শেষ পর্যন্ত উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার চাঁদপাড়া স্টেশন চত্বর থেকে মনোজ গুপ্তকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গোয়েন্দা শাখা। 


পাসপোর্ট জালিয়াতিকাণ্ডে ধরপাকড় শুরু হতেই বেহালার শীলপাড়ার বাড়ি ছেড়ে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায় গা ঢাকা দিয়েছিলেন মনোজ গুপ্ত। চাঁদপাড়ার ঢাকুরিয়ায় বিশ্বজিৎ দাসের বাড়ি থেকে মনোজকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাড়ি মালিক থাকেন না। ওই বাড়ির ভাড়াটে এক মহিলার কাছে আশ্রয় নেন মনোজ। মহিলার দাবি, মনোজকে তিনি চেনেন না। তাঁর ভাইয়ের সূত্র ধরে ২ দিন আগে এসেছিলেন মনোজ। বাড়িতে অশান্তির কথা বলে আশ্রয় চান। 


পাসপোর্ট জালিয়াতি কাণ্ডে এই নিয়ে সাতজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এর আগে যে ৬ জনকে ধরা হয়েছিল তাঁদের মধ্যে ছিলেন দীপঙ্কর দাস যিনি কাজ করতেন মনোজেরই সংস্থায়। পুলিশ সূত্রে খবর, বেহালার শীলপাড়ার বাসিন্দা মনোজ সখেরবাজারে ট্রাভেল এজেন্সির অফিস খুলে জাল নথি দিয়ে পাসপোর্ট বানাতেন। তার জন্য মোটা টাকাও নিতেন মনোজ। পাসপোর্ট জালিয়াতিকাণ্ডে আরেক ধৃত পর্ণশ্রীর বাসিন্দা দীপঙ্কর দাস মনোজের অফিসেই ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের কাজ করতেন। 


মনোজ গুপ্ত বিভিন্ন লোকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে জাল পাসপোর্ট তৈরি করতেন। কাদের জাল পাসপোর্ট তৈরি হবে, কোন ভুয়ো নিথির বিনিময়ে, কত টাকার রফায় জাল পাসপোর্ট তৈরি করা হবে, সবটাই নখদর্পণে থাকত এই মনোজের। লালবাজারের গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পাসপোর্ট জালিয়াতি করার ব্যাপারে এই মনোজ একজন কিংপিন। 


আরও পড়ুন- দিল্লিতে ধৃত বাংলাদেশি নাগরিকদের বাংলা-যোগ, আধার কার্ডে পশ্চিমবঙ্গের ঠিকানা