সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও রাজীব চৌধুরী, কলকাতা : ডিসেম্বরের মধ্যেই পড়ে যেতে পারে তৃণমূল সরকার। শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষের পর এবার একই দাবি শোনা গেল বিজেপি রাজ্য সভাপতির গলায়। সুকান্ত মজুমদার এবং মিঠুন চক্রবর্তী দু’জনেই দাবি করেছেন, বেশ কয়েকজন তৃণমূল বিধায়ক তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। যদিও এই দাবিকে আমল দিতে নারাজ রাজ্যের শাসক দল।


সরকারের পতনের প্রসঙ্গে ভবিষ্যদ্বাণী
ডিসেম্বর অর্থাৎ বর্ষবরণের প্রাক মুহূর্ত। তৃণমূল সরকারের পতনের প্রসঙ্গে ভবিষ্যদ্বাণী করতে গিয়ে বারবার এই ডেডলাইনই বেধে দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির একের পর এক শীর্ষ নেতা। কখনও শুভেন্দু অধিকারী. তো কখনও সুকান্ত মজুমদার ! 


মমতা ছাড়া, সরকার চালানোর মতো কেউ নেই: সুকান্ত
মঙ্গলবারই সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'এটা আমাদের অনুমান, ডিসেম্বরের মধ্যে এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে যে বেশিরভাগ মন্ত্রী, আমি জানি না মুখ্যমন্ত্রী কি না, সম্ভাবনা আছে মুখ্যমন্ত্রীও জেলে থাকতে পারেন ! সেটা যদি হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবে এই সরকার পড়ে যাবে। কারণ মমতা ছাড়া, সরকার চালানোর মতো কেউ নেই।' 


কিছুদেন আগে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও ডেডলাইন বেঁধে দিয়ে বলেছিলেন, ' ছ'মাস তৃণমূল কংগ্রেস থাকবে না ৷ তার আগেই ডিসেম্বরের মধ্যে ঝাপ গুটিয়ে যাবে তৃণমূলের' 


তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্য সাধারণ সম্পাদক, কুণাল ঘোষ বলেন, ' এক এক জন এক এক কথা বলছেন। কেউ বলছেন পরের ভোট জিততে হবে। আবার কেউ বলছে, এখনই আমাদের সরকার গড়তে হবে। আর গোটাটাই ভাবা হচ্ছে জনগণের উপর নয়, মানুষের ভরসায় নয়। সিবিআই আর ইডির ভরসায়।' 


২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারে এসে নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে ৪০ জন তৃণমূল বিধায়ক যোগাযোগ রেখে চলছেন। এখন ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের আগে মিঠুন চক্রবর্তী দাবি করছেন, ২১ জন তৃণমূল বিধায়ক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।। আবার সুকান্ত মজুমদারের মুখে শোনা গেল ৪১ জনের কথা!!

মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, ' আমরা বলেছি যে ৩৮ জন আমাদের সঙ্গে আছে, তার মধ্যে ২১ জন আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগে আছে। আমি যে ২১ জনের সঙ্গে কথা বলেছি, কারও সঙ্গে টাকা নিয়ে একটাও কথা হয়নি। ' 


 সুকান্ত মজুমদার আবার দাবি করেন, 'আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব, মিঠুনদার কাছে যদি ২১ জনের নাম থাকে, তাঁদের কাছে ৪১ জনের কম নাম থাকবে না, শুধু এটুকু বলতে পারি।' 


অধীর চৌধুরী আবাবর পুরো পরিস্থতিকে কটাক্ষ করে বলেছেন , ' যে পথে দিদি আমাদের দল ভাঙিয়েছেন, এখন বিজেপি তাই করছে। বাংলার পলিটিক্স এখন ট্রেড হয়ে গেছে।' 


দলবদল বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন কিছু নয়। কিন্তু, তার জেরে সরকার পড়ে যাওয়ার নজির কি তৈরি হতে পারে? উত্তর মিলবে আগামী দিনে।