অর্ণব মুখোপাধ্য়ায়, কলকাতা : পার্কিং ফি ( Parking Fee )  বৃদ্ধি নিয়ে বিতর্কের আবহে এই প্রথমবার, এবিপি আনন্দর কাছে মুখ খুললেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ( Firhad Hakim ) । তাঁর সাফ কথা, কোনও ব্য়ক্তিবিশেষ কী বলল, তাতে তাঁর কিছু যায় আসে না। কে এই ব্যক্তি ? কার দিকে খোঁচা ফিরহাদের ?  

'ইন্ডিভিজুয়াল লোক কি বলল তাতে কিছু এসে যায় না'
শুক্রবার তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠকের পর যেভাবে কলকাতা পুরসভাকে বর্ধিত পার্কিং ফি প্রত্য়াহার করতে হয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটে ব্য়ক্তিবিশেষ বলে কাকে ইঙ্গিত করলেন মেয়র? প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, দলের অন্দরের মন কষাকষি নিয়ে। রাজ্যের মন্ত্রী, কলকাতার মেয়র  ফিরহাদ হাকিম সোমবার বলেন, ' আমাকে মানুষের স্বার্থে কাজ করতে হবে ইন্ডিভিজুয়াল কন্ট্রাক্টর, ইন্ডিভিজুয়াল লোক কি বলল তাতে কিছু এসে যায় না।' 

বুঝিয়ে দিলেন নিজের অসন্তোষ


পার্কিং ফি বৃদ্ধি এবং তা প্রত্য়াহার নিয়ে তুমুল বিতর্কে সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। এরই মধ্যে প্রথমবার এবিপি আনন্দে মুখ খোলেন কলকাতার মেয়র! তিনি কি অসন্তুষ্ট ? তাঁর সঙ্গে কি দলের একাংশের দূরত্ব তৈরি হয়েছে ? অভিমান হয়েছে ফিরহাদের ?  EXCLUSIVE সাক্ষাৎকারে ফের কার্যত বুঝিয়ে দিলেন নিজের অসন্তোষ!

সেইসঙ্গে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য়ও করলেন। হাসি মুখে তিনি বললেন ' বিতর্ক নেই। এখন বলেছেন, উইথড্র করেছি। পরে কথা বলে ঠিক করব ' । তার মানে কি আগামী দিনে ফের সিদ্ধান্ত বদল হতে পারে? শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই বিতর্কের আঁচ, এখনও পুরোপুরি থিতিয়ে যায়নি। যে পরিস্থিতিতে বর্ধিত পার্কিং ফি প্রত্য়াহার হয়েছে, তা নিয়ে চর্চা চলছেই।

প্রেক্ষাপট
১ এপ্রিল থেকে কলকাতায় পার্কিং ফি বাড়ানো হয়। কিন্তু, কলকাতা পুরসভার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শুক্রবার আচমকা সাংবাদিক বৈঠক করেন কুণাল ঘোষ!  কুণাল ঘোষের সঙ্গে ফিরহাদ হাকিমের মতপার্থক্য় একাধিকবার সামনে এসেছে, এবার তিনিই সাংবাদিক বৈঠক করে, দাবি করেন, ' এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর অজান্তে! আর অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এনিয়ে মুখ্য়মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন! '

সেই সঙ্গে কলকাতা পুরসভার এই সিদ্ধান্ত যে প্রত্য়াহার করা হবে, তা-ও দলের সাংবাদিক বৈঠক থেকেই ঘোষণা করে দেন কুণাল ঘোষ! গোটা ঘটনায় ফিরহাদ হাকিম যে অসন্তুষ্ট, তা স্পষ্ট হয়ে যায় তাঁর প্রতিক্রিয়াতেই। তিনি বলেন, ' সংবাদমাধ্যমে এভাবে বলা ঠিক হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিলে, অবশ্যই বর্ধিত পার্কিং ফি প্রত্যাহার করে নেব। কিন্তু, বর্ধিত ফি প্রত্য়াহারের নির্দেশিকা জারির আগেই, দলের তরফে ট্য়ুইট করে ধন্য়বাদ জানিয়ে দেওয়া হয় পুরসভাকে।'


সূত্রের খবর, শুক্রবার সন্ধেতেই মেয়রের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর ফোন যায়। তারপরই চাপের মুখে বর্ধিত পার্কিং ফি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এই ঘটনাক্রম বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উস্কে দিয়েছে, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের ঘনিষ্ঠ ফিরহাদ হাকিমকে এভাবে দলের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে বার্তা দেওয়া হল কেন? এটা কি পরিকল্পিত এবং কৌশলমাফিক? আর এই আবহেই রবিবার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য় শোনা যায় মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মুখে। তিনি বলেন, ' মানুষ আসবে, মানুষ যাবে। সমাজ থাকবে, উন্নয়ন থাকবে। আজকে যাঁরা এই বাচ্চা বাচ্চা ছেলেরা রয়েছে, এরা কালকে সমাজের মাথা হবে। তাঁদের মধ্যে দিয়েই আবার এই চেতলায় আরেকটা ববি হাকিম আসবে। ' 

মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের বহু পুরনো সঙ্গী ফিরহাদ হাকিম কি দলের মধ্য়ে একটু কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন? তিনি কি বিশেষ কারোর দিকে ইঙ্গিত দিলেন? তাঁর কথায় ইন্ডিভিজুয়ালই বা কে?