কলকাতা: শুধুমাত্র উৎসব নয়, দুর্গাপুজোর সঙ্গে জড়িত অর্থনীতিও। মাস খানেক আগে রেডরোডেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। খড়্গপুর আইআইটি-র গবেষণাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছিলেন, দুর্গাপুজোকে (Durga Puja 2022) কেন্দ্র করে হাজার হাজার কোটি টাকার ব্য়বসা হয়। এ বার সেই সুর শোনা গেল তাঁর মন্ত্রী তথা কলকাতা পৌরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) গলাতেও। পুজোকে ঘিরে বাংলার অর্থনীতি চাঙ্গা হয়েছে বলে মন্তব্য করলেন তিনি।
দুর্গাপুজোয় চাঙ্গা বাংলার অর্থনীতি, দাবি ফিরহাদের
করোনার কারণে দুই বছর বিরতির পর এ বার ফের শহরে পুজো কার্নিভালের প্রত্যাবর্তন ঘটল। তার উপর বাড়তি পাওনা ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্তি। এই দুই আবেগকে সঙ্গী করে শনিবার শহরে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্য়মে পালিত হল কার্নিভাল। মমতা, শাসকদলের নেতা-মন্ত্রী, কলকাতা পুলিশ, টলিউড শিল্পী এবং সর্বোপরি ইউনেস্কোর অতিথিদের নিয়ে উদযাপন হল দুর্গাপুজো এবং বাংলার সংস্কৃতির।
সেই আবহেই দুর্গাপুজো এবং অর্থনীতির সংযোগ তুলে ধরেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, "দুর্গাপুজোকে ঘিরে আর্থিক উন্নতির জোয়ার আসছে পশ্চিমবঙ্গে। এ বছর পুজোকে কেন্দ্র করে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে যা বেড়ে হবে ১ লক্ষ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৫০ হাজার কোটি টাকা আসবে পর্যটনের হাত ধরেই।"
এ দিন ফিরহাদ বলেন, "এই পুজোয় দেশের অন্য রাজ্য তো বটেই, বিদেশ থেকেও পর্যটকরা কলকাতায় এসেছেন। আগামী দিনে পুজোর সময় পর্যটকদের আগমন আরও বাড়বে। আগের বছর পর্যন্ত আমাদের শুধু পুজোর অর্থনীতি ছিল ৪০ হাজার কোটি টাকা। এ বছর তা ৫০ হাজার কোটি পেরিয়ে গিয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে তা বেড়ে ১ লক্ষ কোটি টাকা হবে। জামা-কাপড়-সহ জিনিসপত্রের কেনাবেচা, হোটেল-রেস্তরাঁয় খাওয়া-দাওয়া এবং পর্যটন থেকে আসবে। দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে বাংলার অর্থনীতি চাঙ্গা। কত বিদেশি নাগরিকরাই বললেন যে, শিল্প এবং সংস্কৃতির এত বড় উদযাপন দেখেননি তাঁরা।"
আরও পড়ুন: Durga Puja Carnival: কার্নিভালে ফূর্তি করে বেড়াচ্ছেন মমতা! তীব্র আক্রমণ অগ্নিমিত্রার
বিরোধীরা যদিও কার্নিভাল করা নিয়ে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে চলেছে। "সরকারি টাকায় মোচ্ছব চলছে" বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল আবার "মুখ্য়মন্ত্রী ফূর্তি করছেন" বলে আক্রমণ শানিয়েছেন। কিন্তু ফিরহাদ পুজোকে লাভের খাতাতেই দেখছেন।
পুজো শেষ হয়ে গেলেও উৎসবের রেশ জিইয়ে রেখে শনিবার রেড রোডে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে পুজো কার্নিভালের আয়োজন করা হয়। বাংলার দুর্গাদুর্গাপুজো" data-type="interlinkingkeywords">পুজো ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পাওয়ার পর এটাই প্রথম পুজো কার্নিভাল। তাই আয়োজনও আগের বছরগুলোর থেকে কিছুটা আলাদা ছিল। এবছর ৯৫টি পুজো কার্নিভালে অংশ নেয়। এক-একটি পুজো কমিটির জন্য বরাদ্দ ছিল ৩ মিনিট সময়। প্রতিটি পুজো কমিটির তরফে সর্বাধিক ৫০ জন কার্নিভালে যোগ দিতে পারেন। প্রত্যেক পুজো কমিটি সর্বাধিক ৩টি ট্যাবলো নিয়ে কার্নিভালে যোগ দানে অনুমতি দেওয়া হয়। কার্নিভাল শেষে গঙ্গায় প্রতিমা নিরঞ্জনের ব্য়বস্থা ছিল।
দুই বছর পর শহরে ফিরল পুজো কার্নিভাল
পুজো কার্নিভাল ঘিরে এ দিন সেজে ওঠে রেড রোড চত্বর।বসানো হয় বড় LED স্ক্রিন। মুখ্যমন্ত্রীর বসার মঞ্চটি মন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়। বিদেশি অতিথিরা উপস্থিত থাকায় রেড রোড চত্বরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী খোদ আগাগোড়া উপস্থিত ছিলেন। কাঁসর, করতাল এবং ঢাক বাজান তিনি। নাচের তালেও পা মেলান। ডান্ডিয়া খেলতেও দেখা যায় তাঁকে।