রুমা পাল, কলকাতা: কারও পায়ে রক্ত জমে গেছে। কোমরে আঘাত। কাউকে বুট দিয়ে লাথি মারা হয়েছে। রেহাই পাননি মূক ও বধির মৎস্যজীবীও। বাংলাদেশের জেলে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন ভারতীয় মৎস্যজীবীরা। গত বছর অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে ৬টি ট্রলারে চড়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন কাকদ্বীপের ৯৬ জন মৎস্যজীবী। আন্তর্জাতিক জল-সীমানা লঙ্ঘনের অভিযোগে তাঁদের গ্রেফতার করে ইউনূস সরকার। সোমবার বাড়ি ফিরেছেন তাঁরা। কিন্তু এখনও তাঁদের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ।                      


ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি: নিরীহ গরীব মানুষ। মাছ ধরে জীবনযাপন। এভাবেই পরিবারের মুখে দু মুঠোভাত তুলে দেন। এই করতে গিয়েই একদিন ধরা পড়েন বাংলাদেশের উপকূলরক্ষী বাহিনীর হাতে। কিন্তু বাংলাদেশের ইউনূস সরকার যে কতটা নির্মম হয়ে উঠেছে, এই সাধারণ ভারতীয় মৎস্য়জীবীদের ওপরও তারা আক্রোশ দেখাতে ছাড়েনি। বাংলাদেশ থেকে মুক্ত ভারতীয় মৎস্য়জীবী সুভাষ দাস বলেন, "মারতে মারতে আমার এগুলো ফাটিয়ে ফেলে। কোমর ফাটিয়ে ফেলে। গাল দিয়ে রক্ত বেরিয়ে যায়। লাথি মারছে বুট দিয়ে।'' সৌরভ বিশ্বাস বলেন, "প্রচুর মার মেরেছে সবাইকে। কেউ কেউ অনেকে রক্ত জমে গেছিল।''

জলই জীবিকা। কিন্তু বাংলাদেশের নির্মম অত্য়াচার সহ্য় করে সেই জলে ফিরতেই এখন ভয়-আতঙ্ক। কট্টরপন্থী-মৌলবাদীদের হাতে পরিচালিত এখনকার বাংলাদেশ ছাড়েনি মূক-বধির মৎস্যজীবীকেও। বাংলাদেশ-ফেরত ভারতীয় মৎস্যজীবীর স্ত্রী প্রমিলা দাস জানাচ্ছেন, অনুরোধ করছে না মারার জন্য, তাও মেরেছে। ওঁদের অনুরোধ করেছিল যে আমাকে মারবে না। আমি বোবা মানুষ, আমাকে অনুরোধ করে ছেড়ে দিন। তাও ওঁকে মেরেছে।

শান্তিতে নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনূস আজ অশান্তির প্রতীক।  গত বছর অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসে ৬টি ট্রলারে চড়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যান কাকদ্বীপের ৯৬ জন মৎস্যজীবী। সেই সময় আন্তর্জাতিক জল-সীমানা লঙ্ঘনের অভিযোগে তাঁদের ধরে ফেলে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। জলে পড়ে মৃত্যু হয় একজনের। বাংলাদেশ-ফেরত ভারতীয় মৎস্যজীবী নিরঞ্জন দাস বলেন, "বলেছি, স্যর ভুল করে চলে এসেছি, ছেড়ে দিন। আমাদের ছাড়েনি। আমাদের একটা লোক পড়ে গেছে। একটু খোঁজ করে দিন। খোঁজ করতেও দেয়নি। টেনে নিয়ে চলে গেছে। পোশাক খুলে নিয়েছে, মাছ, তেল সব কেড়ে নিয়েছে।''

আরও পড়ুন: Dev: তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ে 'পাগলু' গান, ১৪ বছর পর ভুল কবুল দেবের