সুনীত হালদার, হাওড়া: নিম্নচাপের ( Depression ) ভারী বর্ষণে বিপর্যস্ত রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ। ডিভিসি (DVC) জল ছাড়ায় পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে দামোদরের ( Damodar ) নিম্ন অববাহিকা অঞ্চলে। হুগলির ( Hoogly ) খানাকুল, তারকেশ্বর থেকে হাওড়ার ( Howrah ) উদয়নারায়ণপুর, আমতা, জেলায় জেলায় বাড়ছে প্লাবন-শঙ্কা। তবে প্রশাসন সূত্রের খবর, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর এবং আমতার বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে।
নতুন করে গ্রামে জল ঢুকছে না
টানা বর্ষণ এবং ডিভিসি থেকে দফায় দফায় জল ছাড়ার ফলে গত মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে দামোদর নদীর জল উদয়নারায়ণপুরের ঢুকে পড়ায় কমপক্ষে ১৫ টি গ্রাম জলের তলায় চলে যায়। এর ফলে জলমগ্ন হয়ে পড়ে চাষের জমি, রাস্তাঘাট এবং গৃহস্থের বাড়ি। ভেসে যায় আমতা দু'নম্বর ব্লকের ভাটোরা দীপাঞ্চলের ১৫ টি গ্রাম ভাসিয়ে দেয়। কিন্তু পরে ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কমানোর ফলে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। দামোদর নদীর জলস্তর কমে যাওয়ার ফলে এখন আর নতুন করে গ্রামে জল ঢুকছে না। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন চাষিরা।
তবে এখনও উদয়নারায়নপুর এবং আমতা দু জায়গাতেই বেশ কিছু গ্রামের কৃষিজমি এখনও জলমগ্ন রয়েছে। হঠাৎ বন্যার ফলে ধান, আলু এবং সবজি চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়। পুজোর মুখে এই ক্ষতির ফলে মাথায় হাত চাষীদের। তারা কিভাবে ক্ষতি সামাল দেবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার ফলে অনেক মানুষ ত্রাণ শিবির থেকে ঘরে ফিরছেন।
এদিকে প্রতি বছর বর্ষায় বন্যা রুখতে বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সাহায্যে রাজ্য সরকার হাওড়া ও হুগলি সহ পাঁচটি জেলা জুড়ে মেগা প্রকল্পের কাজ করছে। এই প্রকল্পের কাজ এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। এই প্রকল্প অনুযায়ী দামোদর নদীর পূর্ব পাড়ে বাঁধের পাঁচিল উঁচু করার কাজ হলেও পশ্চিম পাড়ের অনেক জায়গায় সেই কাজ হয়নি। ফলে বন্যার জল ওই সব এলাকা দিয়ে বাঁধ টপকে গ্রামের মধ্যে ঢুকেছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে জল পুরোপুরি নামলে ফসলের ক্ষতি নির্ধারণের পর সরকার থেকে চাষির ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থা করা হবে।
অন্যদিকে DVC-র ছাড়া জলে ভাসছে হুগলির খানাকুল। এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। তিনদিন ধরে জলবন্দি, খাবার নেই, ত্রাণ মেলেনি, কেউ খোঁজও নেয়নি। সাংসদের সামনে ক্ষোভ উগরে দিলেন গ্রামবাসীরা। বিক্ষোভের কথা অস্বীকার করে তৃণমূল সাংসদের দাবি, এটা ম্যান মেড বন্যা।
আরও খবর :