কলকাতা: আচমকাই চিঠি লিখে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত। সেই নিয়ে দলের মধ্যে শোরগোল যখন তুঙ্গে, সটান তৃণমূলের যোগ দিলেন অসমের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সেখানকার প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস (Congress) সভাপতি রিপুন বরা (Ripun Bora)। আর এই সব কিছুই ঘটল মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে। কলকাতায় সমারহের সঙ্গে তাঁকে জোড়াফুল শিবিরে স্বাগত জানালেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে রিপুন
সদ্য সমাপ্ত রাজ্যসভার অধিবেশনে বিরোধী শিবিরের প্রার্থী ছিলেন রিপুন। কিন্তু কংগ্রেস এবং অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (AIUDF)-এর মধ্যে ঝামেলার জেরে হেরে যান রিপুন। তার পরই কংগ্রেসের নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে রিপুন দুশ্চিন্তায় পড়েন বলে খবর। সেই পরিস্থিতিতে রবিবার কংগ্রসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়াকে চিঠি লেখেন পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। আর তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই কলকাতায় তাঁকে তৃণমূলে স্বাগত জানাতে দেখা গেল অভিষেককে।
সনিয়াকে চিঠি লিখে ইস্তফা
চিঠিতে সনিয়ার উদ্দেশে রিপুন লেখেন, ছাত্তরজীবন থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত তিনি। ১৯৭৬ সাল থেকে কংগ্রেস করছেন। অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মনেই তাঁকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। কিন্তু এ ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। কারণ দেশের গণতন্ত্র, সংবিধান এবং ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য সবদিক থেকে বিপজ্জনক বিজেপি-র মতো সাম্প্রদায়িক এবং বিভাজনকারী শক্তিকে প্রতিহত করতে একজোটে ঝাঁপিয়ে পড়ার বদলে, কংগ্রেস নেতারা নিজেদের মধ্যেই লড়াই করে চলেছেন।
অসম বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের জন্যও প্রদেশ কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছেন রিপুন। তাঁর দাবি, বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াউ করার পরিবর্তে, নিজ নিজ রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে পরস্পরের সঙ্গে বিরোধ করছেন কংগ্রেস নেতারা। অসমের মানুষও তা বুঝতে পেরেছেন। তাই কংগ্রেস নেতাদের উপর কোনও ভাবেই ভরসা করতে পারছেন না তাঁরা।
উল্লেখ্য, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে, গত কালি দিল্লিতে সনিয়া, রাহুল গাঁধী এবং কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। সেখানে আগামী সাধারণ নির্বাচনে দলের জন্য একটি নীল নকশাও তুলে ধরেন তিনি। এমনকি প্রশান্ত নিজে কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন বলেও শোনা যাচ্ছে। সব বিরোধী দলগুলিকে একছাতার তলায় এনে প্রশান্ত কৌশল রচনা করছেন বলে জল্পনা। সেই বিরোধী জোটে শামিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তৃণমূলেরও। কিন্তু গত এক বছরে বার বার এই জটের প্রশ্নে কংগ্রেসের সঙ্গে সংঘাত দেখা দিয়েছে তৃণমূলের। গোয়া, মেঘালয় এমনকি ত্রিপুরায় কংগ্রেস সদস্যদের ভাঙিয়ে আনার অভিযোগ উঠেছে জোড়াফুল শিবিরের বিরুদ্ধে। রিপুনকে নিয়ে সেই সংঘাত আরও জোরাল হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।