গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ক্যাম্প ফায়ারের মধ্য দিয়ে শেষ হল এবারের সাগরমেলা (GangaSagar Mela 2024 )। মেলা অফিস চত্বরে রবীন্দ্র সংগীত ‘‌আগুনের পরশমণি ছোঁয়ায় প্রাণে’‌ গানে বেজে উঠল মেলার বিদায়ের সুর। ক্যাম্প ফায়ারে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা, জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা।


গতকাল পর্যন্ত 'এবারের মেলায় ১ কোটি ১০ লক্ষ পুণ্যার্থী মেলায় এসেছিলেন', বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস। এবারের মেলা শুরু হয়েছিল ৮ জানুয়ারি। এবারের মেলা মোটের ওপর নির্বিঘ্নে মিটলেও সাগরের যাত্রাপথে মুড়িগঙ্গা নদীর চরায় বারে বারে আটকে গিয়েছে পুণ্যার্থীভর্তি ভেসেল। দীর্ঘক্ষণ ধরে আটকে থাকতে হয় মাঝনদীতে। পাশাপাশি কুয়াশার জেরেও ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। মেলা শেষে এবার বাড়ি ফেরার পালা। বিদায়ের সুর মেলা জুড়ে। 


প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে মুড়িগঙ্গায় ডুবে গিয়েছিল একটি বাংলাদেশি জাহাজ। ডুবে যাওয়া সেই জাহাজের ওপর ১০ বছর ধরে পলি জমতে জমতে তৈরি হয়ে গেছে আস্ত চর। কপিলমুনির আশ্রমে যেতে হলে কাকদ্বীপের লট এইট থেকে মুড়িগঙ্গা নদী পেরোতে হয়। ওপারে কচুবেড়িয়া। সেখান থেকে আরও এক ঘণ্টার পথ গঙ্গাসাগর। কিন্তু বিপত্তি অন্য জায়গায়। মেলার আগে মুড়িগঙ্গা নদীতে ডুবে থাকা বাংলাদেশি বার্জকে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। পরে তা আদৌ কেটে তোলা সম্ভব কিনা, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবে জেলা প্রশাসন। 


যদিও এবার একাধিক বন্দোবস্তের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছিলেন, ৫ লক্ষ ইন্স্যুরেন্স সহ গণ পরিবহণ, চিকিৎসার ব্যবস্থা সম্পর্কে জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  গঙ্গাসাগর মেলায় কোনও সমস্যা হলে ছিল টোল ফ্রি নম্বরও। এবারের মেলায় মোট ২১টি জেটি ব্যবহার করা হয়েছিল। আড়াই হাজার বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ছ’টি বার্জ, ৩২টি ভেসেল, একশোটি লঞ্চ, অতিরিক্ত ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এর পাশাপাশি জিপিএস ট্র্যাকিং, স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং করা হয়েছিল। দুর্ঘটনা মোকাবিলায় ২৪০০ সিভিল ডিফেন্স ও অন্যান্য ভলেন্টিয়ারও নিয়োগ করা হয়েছিল। শুধু মেলার জন্যই ৩০০ বেডের চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছিল। পর্যাপ্ত বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, নার্স, প্যারা মেডিক্যাল উপস্থিত ছিলেন। ক্রিটিক্যাল কেয়ারের রোগীদের জন্য ছিল গ্রিন করিডরের বন্দোবস্ত।'


আরও পড়ুন, জীবন বিজ্ঞান নিয়ে বুক ধুকপুক ? মাধ্যমিকে এভাবে এগোলে শেষ হাসি হাসবে তুমিই


প্রসঙ্গত, এবার গঙ্গাসাগরের মেলায় গিয়ে (Gangasagar Mela 2024)  অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন একাধিক পুর্ণার্থী। তাঁদেরকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে আসা হয়েছিল কলকাতার হাসপাতালে।রাজস্থান ঢোলপুরের বাসিন্দা বছর ৬০ এর মহিলা, শুগুনা দেবীও এবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উড়িয়ে আনা হয়েছিল চিকিৎসার জন্য। ডুমুরজলা হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে কলকাতার এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।