কলকাতা: গঙ্গাসাগরে শুভেন্দু অধিকারীর সভায় অনুমতি দিল না প্রশাসন। বুধবার সাগরদ্বীপে সভা করার কথা ছিল বিরোধী দলনেতার। আজ মহকুমাশাসককে চিঠি দিয়ে জানালেন সাগর থানার ওসি।
আরও পড়ুন, থানার ভিতরে ওসির জন্মদিন পালন ! ভাইরাল ভিডিও
মহকুমাশাসককে চিঠি দিয়ে সাগর থানার ওসি জানিয়েছেন, 'গঙ্গাসাগর মেলায় পূর্ণ্যার্থীদের ও বিরোধী দলনেতার নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত', মহকুমাশাসককে চিঠি পুলিশের। 'বিরোধী দলনেতা জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান। ভিভিআইপি প্রোটোকলে বিকল্প রাস্তা নেই। সভাস্থলে আসার বিকল্প রাস্তাও নেই। আয়োজকরা জানিয়েছেন ১০ হাজার লোক হবে', চিঠিতে উল্লেখ। প্রস্তাবিত সভাস্থলের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত, মহকুমাশাসককে চিঠি পুলিশের।
যুবভারতী-কাণ্ডে VVIP-সংস্কৃতি নিয়ে রাজ্য জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এই আবহে, গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে খবর, সোমবার বৈঠক থেকে গঙ্গাসাগরে VIP-দের জন্য সাধারণ মানুষের যেন কোনও অসুবিধা না হয়, সে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি জানুয়ারি মাসের শুরুতেই হুগলির পুইনানে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মুসলিম সম্প্রদায়ের 'বিশ্ব ইজতেমা'। সূত্রের খবর, সোমবার সে নিয়েও একাধিক ইমামদের সঙ্গেও বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। গঙ্গাসাগরে কোনও VIP কালচার চলবে না। VIP-দের জন্য সাধারণ মানুষের যেন কোনও অসুবিধা না হয়।যুবভারতী-কাণ্ডের পর যখন VVIP সংসকৃতি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে, তখন গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন নিয়ে বৈঠকে, এই বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, বৈঠক শুরুর আগে যুবভারতীর বিশৃঙ্খলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।এমনকী ম্যানেজমেন্ট ও পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মুখ্য়মন্ত্রী।তবে মেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যে মন্ত্রীদের, সেই তালিকায় রয়েছেন অরূপ বিশ্বাস এবং সুজিত বসু। যুবভারতীকাণ্ডের পর যাঁদের নিয়ে বিভিন্ন মহলেই প্রশ্ন উঠেছে। নবান্ন সূত্রে খবর, সোমবার গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন নিয়ে সোমবারের বৈঠক থেকে পুলিশ-প্রশাসন ও মন্ত্রীদের একগুচ্ছ নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তিনি বলেন, ভিড় নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে, ১২ জানুয়ারি গঙ্গাসাগরে পৌঁছে যাবেন মন্ত্রীরা।দায়িত্ব পেয়েছেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম,পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুরা।কলকাতায় থেকে গোটা ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করবেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বাসুরা।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, গঙ্গাসাগর মেলা পরিচালনা করতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ভলান্টিয়ারকে ট্রেনিং দিয়ে পাঠানো হবে। ভিড় সামলাতে পুণ্যার্থীদের হাতে নির্দিষ্ট রিস্টব্যান্ড ও আইডি কার্ড থাকবে। এর পাশাপাশি সকল পুণ্যার্থীর ইনস্যুরেন্স থাকবে। নিরাপত্তা বজায় রাখতে চলবে ড্রোন ও সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারি। পুণ্যার্থীদের জন্য যাবে প্রায় ২ হাজার ৫০০টি বাস, প্রায় ২৫০টি লঞ্চ ও প্রায় ২১টি জেটি। একদিকে গঙ্গাসাগর মেলা..অন্যদিকে বছর শুরুতেই,হুগলির পুইনানে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মুসলিম সম্প্রদায়ের 'বিশ্ব ইজতেমা'।সূত্রের খবর, সোমবার এনিয়েও নবান্নে একাধিক ইমামদের সঙ্গেও বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে খবর, বৈঠক থেকেই শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান পরিচালনা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অনুষ্ঠানকে ঘিরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসন কেও সক্রিয় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের কথাও বৈঠকে উপস্থিত সকলকে মনে করে দিয়েছেন তিনি।তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ওঁর একটা হুগলিতে ধর্মীয় সভা হবে, সারা ভারতেই হয়। তা নিয়েই এর সঙ্গে ইমাম ভাতার কোনও সম্পর্ক নেই। সুষ্ঠুভাবে যাতে এটা একটা ধর্মীয় সমাবেশটা, সেজন্য বলেছেন আর কিছুই না।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন,এটা ধর্মীয় বিষয়। ওখানে যে ধর্মীয় অনুশাসন আছে সেখানে ওঁর ডাক পড়বে কিনা সন্দেহ । তবে হুমায়ুন কোভিদ যে ভাষায় কথা বলছে সেই বিপদজনক ভাষায় কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কথা বলেন কিনা সেটা ভাববার । বাংলার মানুষকে ঠিক করতে হবে বাংলার মানুষ কি চায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপে ১০ থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে গঙ্গাসাগর মেলা। অন্যদিকে, দোসরা জানুয়ারি থেকে শুরু করে চৌঠা জানুয়ারি পর্যন্ত হুগলির পুইনানে চলবে 'বিশ্ব ইজতেমা'।