সত্যজিৎ বৈদ্য ও রঞ্জিত সাউ, কলকাতা: গার্ডেনরিচ বহুতল বিপর্যয়ের (Garden Reach Building Collapse) পর ইতিমধ্য়েই 'অবৈধ নির্মাণ' নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। হাইকোর্টের (High Court) নির্দেশে অবশেষে সল্টলেকের নয়াপট্টিতে ভাঙা হল ক্লাবের বেআইনি নির্মাণ। আগে তিনবার আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও বাধার মুখে পড়ে নির্মাণ ভাঙতে পারেনি পুরসভা (Municipality) । নির্মাণের কোনও প্ল্যান ছিল না, স্বীকার করেছেন খোদ তৃণমূল কাউন্সিলরও (TMC Councilor)। যা নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধীরা।
গার্ডেনরিচের পর বেআইনি নির্মাণ ঘিরে চড়ছে পারদ, হাইকোর্টের নির্দেশে অবশেষে সল্টলেকের নয়াপট্টিতে ভাঙা হল ক্লাবের বেআইনি নির্মাণ। গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে ভয়াবহ বিপর্যয়ে একের পর এক মৃত্যু। বেআইনি নির্মাণ ঘিরে চড়ছে পারদ। তার মধ্যেই সোমবার সল্টলেকের নয়াপট্টিতে ক্লাবের বেআইনি নির্মাণ ভাঙল পুলিশ। ২০২১ সালে তৈরি করা হয়েছিল নয়াপট্টি আদিত্য স্মৃতিসঙ্ঘ নামের এই ক্লাব।
অভিযোগ, জমি জবরদখল করে ক্লাবটি তৈরি করেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর। বাধা দিতে গেলে লোক জড়ো করে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকী হাইকোর্টের নির্দেশও কার্যত তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া হয়।২০২২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথমবার এই বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তারপর আরও দুবার। কিন্তু তিনবারই স্থানীয়দের একাংশের বাধার মুখে পড়ে ফিরতে হয় বিধাননগর পুরসভাকে।
জমির মালিক বাপ্পা প্রামাণিক বলেন, ২০২১ সালের জুন মাসের ৫ তারিখে আমাদের উপরে প্রচন্ড অত্যাচার করে জয়দেব নস্কর এবং তার সঙ্গে বহিরাগতরা। বাধা দিলে বলে তুই কী করতে পারবি আমি কাউন্সিলর। তখন প্রায় ৩০০ লোকজন নিয়ে আমাদের পরিবারের সবাইকে মারধর করে। ২০২১ সালে লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যেই এখানে কনস্ট্রাকশন হয়েছে। তারপরে আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হই। আদালতের নির্দেশে বিধাননগর মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের আধিকারিকরা ইনস্পেকশন করে এবং জানতে পারে আমাদেরই প্রপার্টি। কর্পোরেশন বারবার হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকার পরেও কোন কাজ করেনি। তার জন্য আমি কনডেম করি। এইটা নিয়ে চারবার কোর্টের নির্দেশ।
বিধাননগর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা ও কাউন্সিলর জয়দেব নস্কর বলেন, যেটা বলা হচ্ছে, ডেমোলাইজ যেটা করতে চাইছে, নাকি ক্লাবটার প্ল্যান নেই। আপনারা বলুন তো, কোনও ক্লাবের প্ল্যান আছে? পশ্চিমবাংলায় হাজার হাজার-লাখ লাখ ক্লাব আছে, কোন ক্লাবের জমির কাগজ আছে? দেখুন ক্লাবের প্রেসিডেন্ট, আমি সহ আমাদের প্রত্য়েকটা সদস্য আজকে প্রশাসনকে আমরা সাহায্য় করব, সহযোগিতা করব। কর্পোরেশনকে সাহায্য করব, সহযোগিতা করব। কিন্তু আগামীদিনে এই ক্লাব ছিল, আছে,আগামীদিনেও থাকবে।
আরও পড়ুন, গার্ডেনরিচকাণ্ডে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
চারবার হাইকোর্টের নির্দেশের পর অবশেষে প্রায় দেড় বছর পর বেআইনি নির্মাণ ভাঙল পুলিশ। সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন,যাদবপুরে বেআইনি বাড়ি, একেবারে কাউন্সিলরের প্রত্যক্ষ মদতে। সল্টলেকেও তাই। সবাই জানে। কোর্টের অর্ডার হওয়া সত্ত্বেও ভাঙা যাচ্ছে না। কেন? কারণ কাউন্সিলর আছে। তৃণমূলের নেতারা আছে। সব মিলিয়ে লোকসভা ভোটের আগে বেআইনি নির্মাণ ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি।