ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা : এক যুগ পেরিয়ে গিয়েছে পাশ করে গিয়েছেন কলেজ। অথচ এখনও ঘর-বাড়ি কলেজ। সেখানেই তাক কথায় সকলে ওঠে বসে। সেখানেই চলে তার নিয়ম। এবার দক্ষিণ কলকাতার নামি কলেজে আরেক 'দাদা'র দাপাদাপি ! গড়িয়াহাট ITI কলেজেও নাকি বছরের পর বছর ধরে চলছে 'মনোজিৎ মডেল'! কসবাকাণ্ডর পর মনোজিতের বিতর্কিত আচার আচরণ সামনে আসার পর , গড়িয়াহাট ITI কলেজের ক্যাম্পাসে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। প্রতিবাদ জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুধু কলেজের ছেলেমেয়েরা নয়, এই 'দাদা'র দাপটে অতিষ্ঠ পড়শিরাও।
অভিযোগ, দক্ষিণ কলকাতার প্রাণকেন্দ্র গড়িয়াহাটে ITI কলেজে মনোজিৎ ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় চৌধুরীর দাপট চলছে বহুকাল ধরে। তিনি ১৩ বছর আগে পাশ করে গিয়েছেন। অথচ রোজ তাঁর এখানে যাতায়াত। একেবারে মৌরসি পাট্টা চলে তাঁর। কলেজে অসামাজিক কাজে যুক্ত মনোজিৎ ঘনিষ্ঠ প্রাক্তনী সঞ্জয় চৌধুরীর কার্যকলাপ নাকি মনোজিতের মতোই। অভিযোগ স্থানীয়দের। অভিযোগ, রাত ১২টার পরেও এ কলেজ খোলা থাকে, জ্বলে আলো। রীতিমতো আসর বসান 'সঞ্জয় দা'
অভিযোগ, মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে মদ্যপান থেকে ভোজপুরী গান চালিয়ে জন্মদিন পালন করা হয় ক্যাম্পাসেই। এখানেই শেষ নয়, ক্যাম্পাসে যখন তখন মেয়েদের ডেকে পাঠানো হয় বলে অভিযো। কলেজ থেকে পাশ করে গিয়েও এই কলেজে সেই 'দাদা'। সঞ্জয়ের দাদাগিরির বিরুদ্ধে এবার সরব স্থানীয়রাও। তবে কলেজের কর্মী থেকে শিক্ষকদের বেশিরভাগই, কেউই তাঁর বিরুদ্ধে ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে চাইছেন না।
এদিকে কসবাকাণ্ডের ১১ দিন পরে সোমবারই খুলেছে সাউথ ক্যালকাটা ল'কলেজ। সোমবার সকাল ৮টায় কলেজ খোলে। কলেজ খুললেও বেশ কিছু বিধি নিষেধ আরোপ করেছে কর্তৃপক্ষ।আইডি কার্ড ছাড়া কোনও পড়ুয়া কলেজে ঢুকতে পারবে না। সমস্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সকাল আটটা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত কলেজে থাকতে পারবেন। সোমবার কলেজের সামনে প্রচুর পুলিশে মোতায়েন ছিল। আইডি কার্ড দেখে তবেই সকলকে কলেজে ঢুকতে দেওয়া হয়। এগুলি খুবই সাধারণ নিয়ম। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন কলেজে এসব নিয়ম লঙ্ঘিত হচ্ছে। বহু বছর আগে পাশ কয়ে যাওয়া সিনিয়ররা লাঠি ঘোরাচ্ছেন ক্যাম্পাসে। নিয়ম ভাঙার নজির গড়ছেন। তা নিয়ে এদ্দিন কেউ মুখ খুলতে পারেননি বা মুখ খুলেও লাভ হয়নি। এখন কসবাকাণ্ডে মনোজিতের মুখোশ খুলে যাওয়ার পর সাহসে ভর করে একটু একটু প্রতিবাদের পথে করে এগোচ্ছেন অনেকেই, কণ্ঠ ছাড়ছেন জোরে।