কলকাতা : জনপ্রতিনিধিদের দল পরিবর্তন, সরকার বদল। সাম্প্রতিককালে একাধিক রাজ্যে এই ছবি দেখা গেছে। বেশ কয়েকদিনের টানাপোড়েনের পর ক্ষমতার বদল। মহারাষ্ট্র, বিহারেই সম্প্রতি এই পটপরিবর্তনের ছবি ধরা পড়েছে। এ রাজ্যেও দলবদলের হিড়িক দেখা গেছে। এই পরিস্থিতিতেই প্রশ্ন উঠছে তবে কি দলত্যাগ বিরোধী আইনের (Anti-Defection Law) পরিবর্তন দরকার ? এনিয়ে 'ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন'-এর অনুষ্ঠানে নিজের মতামত জানালেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)।


নৈতিকতার অভাব ?


রাজীব গাঁধীর সময়ে তৈরি হয়েছিল দলত্যাগ বিরোধী আইন। তারপর সেই আইনের প্রয়োগে কোথাও কোনও ফাঁক রয়ে গেছে ? ঘোড়া কেনাবেচা হচ্ছে, বিধায়ক এক দল থেকে আর এক দলে যাচ্ছেন। সরকার পড়ে যাচ্ছে, নতুন তৈরি হয়ে যাচ্ছে । গোটা ছবিটায় নৈতিকতার অভাব বোধ হচ্ছে। এক্ষেত্রে কি আইনের পরিবর্তন দরকার ? এই প্রশ্নের উত্তরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, "আইন পরিবর্তনের কোনও দরকার নেই।"


কিন্তু কেন ? তাহলে সমাধান কীসে ? বিচারপতির মতে, "স্পিকার যাঁরা আছেন, যাদের কাছে বিষয়টা উত্থাপিত হয়, সৎভাবে ন্যায়পরায়ণভাবে যে শপথ তাঁরা নিয়েছেন বিধানসভায় দাঁড়িয়ে, সেভাবে কাজ করলে এখানে কোনও ফাঁক নেই। আইনের জগতে ইতিমধ্যে অনেক লিগ্যাল প্রিন্সিপাল তৈরি হয়ে আছে। তাকে ব্যবহার করেই ওইসব ফাঁক ভরাট করে দেওয়া যায়। আইন পরিবর্তন করতে হয় না। মানুষের নৈতিক চরিত্রের পরিবর্তন দরকার। আমাকে কিছুদিন আগেই একজন বলেছিলেন, আপনি নিজেকেই পরিবর্তন করতে পারবেন না, আপনি অন্য লোককে কীভাবে পরিবর্তন করবেন ? খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা।"


এপ্রসঙ্গে উল্লেখ্য, আজই শিশির অধিকারীর (Sisir Adhikari) সাংসদ পদ খারিজের দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার (Om Birla) কাছে তৃণমূলের তরফে এই দাবি জানান সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (Sudip Banerjee)। দলত্যাগ বিরোধী আইনে কাঁথির সাংসদের পদ খারিজের আবেদন জানানো হয়। পাল্টা অর্জুন সিংকে নিয়ে লোকসভার স্পিকার প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন বলে সূত্রের খবর। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে অমিত শাহর সভামঞ্চে দেখা যায় শুভেন্দুর বাবা ও কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীকে। যদিও তিনি তৃণমূলের সাংসদ পদ ছাড়েননি। এই পরিস্থিতিতে তাঁর সাংসদপজ খারিজের দাবিতে লোকসভার অধ্যক্ষকে চিঠি দেন সুদীপ। দীর্ঘদিন ধরে সেই টানাপোড়েন চলছে। যদিও সম্প্রতি শিশির অধিকারী বলেন, 'তৃণমূলে ছিলাম, আছি, থাকব'। 


আরও পড়ুন ; ফের শিশিরের সাংসদ পদ খারিজের দাবি