সোমনাথ দাস, অলোক সাঁতরা, বিটন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর, কলকাতা: ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন নিয়ে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন  রাজ্যের সেচমন্ত্রী-সহ তৃণমূলের ১০ জনের প্রতিনিধি দল। প্রকল্প দ্রুত কার্যকরের দাবিতে নীতি আয়োগেরও দ্বারস্থ হবেন সৌমেন মহাপাত্র, মানস ভুঁইয়ারা। বৈঠক হবে, কাজ হবে না। কটাক্ষ করেছেন দিলীপ ঘোষ।


জল নেমেছে, স্বাভাবিকের পথে জনজীবন। কিন্তু এই স্বস্তি কত দিনের?সামনের বর্ষায় কি ফের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে? সেই আশঙ্কাতেই দিন কাটছে ঘাটালবাসীর।


এই প্রেক্ষাপটে, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলতে দিল্লি গেলেন রাজ্যের মন্ত্রী, তৃণমূল সাংসদ ও বিধায়কদের ১০ জনের দল। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতের সঙ্গে দেখা করবেন তাঁরা।


মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  ১০ অগাস্ট বলেছিলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানটা আমি সৌমেন মহাপাত্র, মানস ভুঁইয়াকে এঁদের সবাইকে বলব সেচমন্ত্রী কেন্দ্রের কাছে গিয়ে, এখন লোকসভা চলছে একটা দিন সময় করে গিয়ে, কেন্দ্রীয় সেচমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করুক এবং একটা দাবি জানাক।


১০ অগাস্ট ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে এই নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই অনুযায়ী দিল্লিতে গেল ১০ জনের প্রতিনিধি দল। সেই দলে রয়েছেন,সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুইয়া, দেব-সহ তিন জন সাংসদ।এবং রাজ্যের ৫ জন প্রতিমন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়ক।


সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেছেন, ডিপিআর ছিল আড়াই হাজার কোটি টাকা। সেটা কেটে ১২৫০ কোটি টাকার প্রকল্প। আমরা চাইছি, কেন্দ্র নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিক, যে প্রকল্পের প্রতি তাদের সায় রয়েছে। তারপর আমরা ডিপিআর তৈরি করে জমা দেব। কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চনা করছে...আমরা জলশক্তি মন্ত্রক ও নীতি-আয়োগ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করব।


যদিও রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগে কোনও লাভ হবে না বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।


১৯৫৯ সালে নেহরু সরকারের তৈরি কমিটি বন্যা কবলিত ঘাটাল পরিদর্শন করে।১৯৭৯ সালে জনতা সরকারের আমলে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। ১৯৮২ সালে ইন্দিরা গান্ধীর আমলে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান প্রকল্পের শিলান্যাস হয়। তারপর কাটতে চলেছে চার-চারটে দশক...কেন্দ্রে ও রাজ্যে সরকার বদল হয়েছে...কিন্তু ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান আজও বাস্তবায়িত হয়নি। আর্থিক দায়ভার নিয়ে শুধুই চলছে দুই সরকারের চাপানউতোর।


ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে, ফি বর্ষায় ফিরে আসে দুর্ভোগের চেনা ছবি।মঙ্গলবারের বৈঠক কি কোনও দিশা দেখাতে পারবে? অপেক্ষায় ঘাটালবাসী।