সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Group D Recruitment Scam Case) চাঞ্চল্যকর দাবি সিবিআইয়ের (CBI)। আদালতে জমা দেওয়া কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, মেধাতালিকার (Merit List) প্রথম ১০ জনই ফাঁকা OMR শিট জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু এসএসসি-র সার্ভারে তাঁদের নম্বরই বেড়ে হয়ে গিয়েছিল ৪৩!  


SSC'র OMR কারচুপিতে, শুক্রবারই হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি গেছে ১ হাজার ৯১১ জন গ্রুপ ডি কর্মীর। অন্য়দিকে, গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলার তদন্তে, সিবিআই আদালতে যে রিপোর্ট পেশ করেছে, তা-ও চোখ কপালে তোলার মতো! তাতে দেখা যাচ্ছে, মেধাতালিকায় প্রথম দশজনেরই প্রাপ্ত নম্বর শূন্য় ! অর্থাৎ যাঁদের নিয়োগ তালিকারই বাইরে যাঁদের থাকার কথা, তাঁরাই মেধাতালিকার শীর্ষে ! 

সিবিআইয়ের রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে, গাজিয়াবাদে OMR শিট মূল্যায়নকারী সংস্থার অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া হার্ডডিস্কে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রত্য়েকে সাদা খাতা জমা দিয়েছেন ! কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, মেধা তালিকায় প্রথম দশে থাকা প্রার্থীরা রোল নম্বর, ভেন্যু কোড এবং বুকলেট সিরিয়াল ছাড়া OMR শিটের আর কোথাও কালির আঁচড়টুকুও কাটতে পারেনি ! উত্তর দেওয়ার অংশ পুরোটাই ফাঁকা !

সিবিআইয়ের দাবি, দুর্নীতির জাদুবলে OMR শিট মূল্যায়নকারী সংস্থার সার্ভারে শূন্য পাওয়া এইসব প্রার্থীদের নম্বরই এসএসসির সার্ভারে বেড়ে হয়ে গেছে ৪৩ ! শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এই রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই। যেখানে দাবি করা হয়েছে, ২০১৬ সালে গ্রুপ ডি-তে মোট ৪ হাজার ৪৮৭ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। এসএসসির হার্ড ডিস্ক ও সার্ভারে নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছে ২ হাজার ৮২৩ জনের।তাঁদের মধ্যে প্যানেলভুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৯৮ জন। ওয়েটিং লিস্টে ছিলেন আরও ৯৮৪ জন। ২০১৬ তে গ্রুপ ডি নিয়োগের মেধাতালিকায় সবার প্রথমে নাম ছিল, জেনারেল ক্যাটিগরির ইন্দ্রজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। প্রথম স্থানে সুধেন্দু মিত্র বলে আরও একজন প্রার্থীর নাম ছিল।

গাজিয়াবাদে OMR শিট মূল্যায়নকারী সংস্থার সার্ভারে এই দুজনের OMR শিট ! তাতে একটি প্রশ্নেরও উত্তর দেওয়া নেই ! দ্বিতীয় স্থানে থাকা সঞ্জিত ঘোষ, শর্মিলা মাহাতো, তৃতীয় সুস্মিতা সামন্ত, মৃণালকান্তি মণ্ডল থেকে শুরু করে মেধাতালিকায় দশম স্থানে থাকা তারাপদ দাস পর্যন্ত সকলেরই OMR শিটের উত্তর দেওয়ার অংশ পুরোটাই ফাঁকা! আদালতের এদিনের নির্দেশের পর যে ১ হাজার ৯১১ জনের সুপারিশপত্র বাতিল করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন, সেই তালিকাতেও এই দশজনের নাম রয়েছে।
আরও পড়ুন ; '৩ সপ্তাহের মধ্যে বাতিল হওয়া আড়াই হাজার পদে নিয়োগ', গ্রুপ ডি মামলায় নির্দেশ হাইকোর্টের