রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: ময়নাগুড়িতে ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলে (North Bengal Train Accident) গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (Rabindranath Ghosh)। শুক্রবার সকালে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার সময় বুকে হালকা ব্যথা অনুভব করেন তিনি। তড়িঘড়ি ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাড়িতে রেখে আসা হয় তাঁকে। আপাতত রবীন্দ্রনাথের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে।
এ দিন ময়নাগুডি়তে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোও। তার মধ্যেই পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান রবীন্দ্রনাথ। সেখানে দুর্ঘটনার জন্য রেলের ভূমিকাকেই দায়ী করেন তিনি। পুরনো কামরা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন। দ্রুত দুর্ঘটনার তদন্তের রিপোর্ট জমা দেওয়ার দাবিও জানান। সেই সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন রবীন্দ্রনাথ। ধরাধরি করে তাঁকে সেখান থেকে বার করে নিয়ে যান উপস্থিত মানুষ জন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ ময়নাগুড়ির দোমহনিতে পটনা-গুয়াহাটি বিকানের এক্সপ্রেসটি (Bikaner Express Derailment) লাইনচ্যূত হয়ে যায়। দুর্ঘটনার পর যে ছবি সামনে আসে, তাতে একটি কামরা অন্য কামরার উপর উঠে গিয়েছে বলে দেখা যায়। প্রথমে জানা যায়, ট্রেনের চারটি কামরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরে রেলের তরফে জানানো হয়, ইঞ্জিনের পর থেকে ১২টি কামরা ক্ষতিগ্রস্তু হয়েছে। একাধিক কামরা দুমড়ে মুচড়েও যায়।
দুর্ঘটনার পর গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত ৯ জন যাত্রীর মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহতের সংখ্যা ৪২। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল, ময়নাগুড়ি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁদের। রেলের তরফে মৃতদের পরিবারকে মাথাপিছু ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে। গুরুতর আহতরা ১ লক্ষ টাকা করে এবং অল্পবিস্তর চোট পেয়েছেন যাঁরা, তাঁরা ২৫ হাজার টাকা করে পাবেন।
তবে দুর্ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টার বেশি কেটে গেলেও, দুর্ঘটনার আসল কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। রেলের তরফে তদন্ত শুরু হয়েছে যদিও। প্রাথমিক তদন্তের পর রেল কর্তাদের সন্দেহ, ইঞ্জিনের ট্র্যাকশন মোটর ভেঙে পড়াতেই বিপত্তি ঘটে। রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের নেতৃত্বে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।