বিটন চক্রবর্তী,  পূর্ব মেদিনীপুর: থিমের হাত ধরে সৃজনশীলতা আর শৈল্পিক উৎকর্ষের ক্যানভাসে পরিণত হয়েছে শারদোৎসব। শুধুমাত্র দুর্গা বা শ্যামাপুজোর মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে, থিমের পরশ লক্ষ্মীপুজোতেও। ধনদেবীর আরাধনায় কোথাও মণ্ডপসজ্জায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আদিবাসী গ্রাম, কোথাও আবার মূল ভাবনায় উঠে এসেছে নারী শক্তি। 



থিমের লক্ষ্মীপুজো
পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া শিল্পাঞ্চল লাগোয়া চাউলখোলা আর কিসমত শিবরামনগর, এই দুই গ্রামে গেলে এমনই থিমের লক্ষ্মীপুজো দেখা যাবে। লক্ষ্মীপুজোর প্যান্ডেলে কোথাও উঠে এসেছে আদিবাসী একটি গ্রাম, কোথাও আবার নারীশক্তি। কোথাও আবার থিম শস্যগোলা। হলদিয়া শহর লাগোয়া এই গ্রামগুলিতে চলে থিম নিয়ে একে অন্যকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা। 


হলদিয়ার লক্ষ্মীগ্রাম
হলদিয়ার লক্ষ্মীগ্রাম হিসেবেই পরিচিত এই এলাকা। দুর্গাপুজো নয়, লক্ষ্মীপুজোই এখানকার প্রধান উৎসব! চাউলখোলার বাসিন্দা শিপ্রা মান্না জানালেন, 'পুজোকে কেন্দ্র করে বাড়িতে পুজো আত্মীয়স্বজন আসেন। দুর্গাদুর্গাপুজো" href="https://bengali.abplive.com/topic/durga-puja/amp-2022/amp" data-type="interlinkingkeywords">পুজোর চেয়েও লক্ষ্মীপুজোয় আমরা বেশি আনন্দ করি।'


করোনা আবহে গত দুবছর লক্ষ্মীপুজো সারতে হয়েছিল নমো নমো করে। এবার ফিরেছে আড়ম্বর। লক্ষ্মীগ্রামে লক্ষ্মীপুজোয় জোরদার থিমের টক্কর। ৬৬ বছরের পুরনো চাউলখোলা অগ্রণী সঙ্ঘের পুজোয় এবার থিম নারীশক্তি। পরিবেশবান্ধব উপকরণ দিয়ে সাজানো হয়েছে মণ্ডপ। প্রায় ৯০ বছরের পুরনো ঋষি অরবিন্দ ক্লাবের লক্ষ্মীপুজোয় থিম হল বাংলার শস্যগোলা। সমন্বয় ক্লাবের পুজোমণ্ডপে উঠে এসেছে এক টুকরো আদিবাসী গ্রাম। 


অগ্রণী সঙ্ঘর সভাপতি সমীর মাইতি জানালেন, ' আমাদের বাবা কাকারা এই পুজো শুরু করেছিলেন। এখন আমরা সেটা করছি। এই গ্রাম হলদিয়া শিল্পাঞ্চল লাগোয়া। আমাদের এলাকার মূল জীবিকা ছিল চাষবাস। তা যাতে ভাল হয়, তার জন্যই লক্ষ্মীপুজো হয়ে আসছে।' 


কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষ্যে ৫ দিন ধরে মেলা চলে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল লাগোয়া দুই গ্রামে।  


অন্যদিকে, হাওড়ার আমতার জয়পুরের খালনা গ্রামে দুর্গার থেকেও বেশি কদর, আদর, আপ্যায়ন লক্ষ্মীর। গ্রামবাসীরাই জানাচ্ছেন, প্রায় ফি বছর আমতায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাই সেই বিপর্যয়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করতে খালনা গ্রামে লক্ষ্মীর আরাধনা করেন গ্রামবাসীরা। 


বারোয়ারি পুজো  ২৫
বছর বারোয়ারি পুজো হচ্ছে প্রায় ২৫টি।  বাড়ির পুজোর সংখ্যা ১০০-র বেশি।  আশপাশের এলাকায় এই গ্রামের পরিচিতি লক্ষ্মীর গ্রাম হিসেবে।  অনেক বারোয়ারি পুজোর মণ্ডপেই প্রাধান্য পেয়েছে থিম।  কোথাও কোভিডের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে হাসপাতাল, কোথাও প্রয়াত গায়ক গায়িকাদের স্মরণ করে তৈরি হয়েছে থিম- সরগম।  


থিম লক্ষ্মী পুজো 
খালনার আমরা সবাই ক্লাবের পুজোর উদ্যোক্তা আশিস বোধক জানালেন, 'আমাদের থিম কোভিড। কোভিডকে হারিয়েছি। মণ্ডপ তৈরি হয়েছে হাসপাতালের মডেলে।  কোভিড এখানে অসুর।'