ব্রতদীপ ভট্টাচার্য ও সমীরণ পাল, নদিয়া: হাঁসখালিকাণ্ডে (Hanskhali Rape Case) অভিযুক্ত ব্রজ গয়ালির আরও কীর্তি ফাঁস। অভিযুক্ত ব্রজ গয়াল ওরফে সোহেলের (Braja Gayali) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ প্রতিবেশিদের। তাঁদের দাবি, ঘটনার দিন ৪-৫ বন্ধু নিয়ে ওই বাড়িতে এসেছিলেন ব্রজ গয়ালি। বন্ধুদের নিয়ে রোজই প্রায় নেশা করতেন তৃণমূল (TMC) নেতা সমর গয়ালির ছেলে (Samar Gayali)। আগেও একাধিক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তাঁর। এত দিন ভয়ে কেউ তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস দেখাননি বলে জানিয়েছেন সকলে। স্থানীয়দের অভিযোগ, "তৃণমূল নেতা সমর গয়ালি আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ভয় দেখাতেন। ভোটের সময় তৃণমূলের হয়ে মিছিলে যেতে চাপ দেওয়া হত।" 


সিবিআই-এর সামনে ক্ষোভ উগরে দিলেন সকলে


হাঁসখালি গণধর্ষণ ও খুনের মামলায় তদন্তভার নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার গ্রামে যান সিবিআই অফিসাররা। তাঁদের কাছে তৃণমূল নেতা ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন গ্রামবাসীরা। সিবিআইকে সামনে পেয়ে, ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে কাতর আবেদন জানান তাঁরা।


কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে CBI  হাঁসখালিকাণ্ডের তদন্তভার নেওয়ার পরে, গণধর্ষণ ও খুনের মামলায় FIR দায়ের করেছে সিবিআই। FIR-এ নাম রয়েছে শুধুমাত্র তৃণমূল নেতার ছেলে, ধৃত ব্রজ ওরফে সোহেল গয়ালির। বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের টিম গ্রামে পৌঁছনোর পর, অভিযুক্ত ব্রজ এবং তার বাবা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সমর গয়ালির বিরুদ্ধে, বিস্ফোরক অভিযোগ করেন প্রতিবেশিরা।


আরও পড়ুন: Hanskhali Case: আতঙ্কে হাঁসখালি, 'আমরা বাঁচতে চাই', সিবিআইয়ের কাছে কাতর আবেদন গ্রামবাসীর। Bangla News


সিবিআইয়ের ডিআইজি অখিলেশ সিং, তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে বাইরে বেরোনোর সময়, এক মহিলা কাতরভাবে তাঁর হাত ধরে, তৃণমূল নেতা সমর গয়ালি এবং তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। ভোটের সময় বিরোধীদের মারধর থেকে শুরু করে পঞ্চায়েতের কাজে তোলাবাজি, সিবিআই অফিসারদের দেখে ভুরি ভুরি অভিযোগ তুলতে থাকেন গ্রামবাসীরা।


তৃণমূল নেতা এবং তাঁর ছেলের কীর্তি ফাঁস!


এক মহিলাকে বলতে শোনা যায়, "স্বামী ভোটে দাঁড়িয়েছিল। ধরে ওকে বেধড়ক মারল। পুলিশের কাছে গেলাম, কোনও অভিযোগ নিল না।" অন্য আর এক জন বলেন, "ওঁর কাছে যে কোনও কাজে গেলেই, জন্ম, মৃত্যুর সার্টিফিকেট যাই হোক না কেন, ওঁকে টাকা দিতেই হবে, না হলে কাজ হবে না।"


বুধবার রাতেই হাঁসখালি থানায় গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে সিবিআইয়ের ৩ সদস্যের দল। CBI সূত্রের খবর, পুলিশের কাছ থেকে কেস ডায়েরি-সহ অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়। প্রায় ৪ ঘণ্টা হাঁসখালি থানায় ছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টেয় সিবিআইয়ের অফিসাররা CFSL-এর বিশেষজ্ঞদের নিয়ে পৌঁছন মৃতার বাড়িতে। ৪ এপ্রিল রাতে নিজের বাড়িতে যে ঘরে নাবালিকাকে রাখা হয়েছিল, সেই ঘরে ঢুকে নমুনা সংগ্রহ করে তাঁরা। সেখান থেকেই সিবিআই ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল চলে আসেন অভিযুক্ত ব্রজ ওরফে সোহেল গয়ালির বাড়িতে। যেখানে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, সেই ঘরের দরজার তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন তাঁরা।