পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : হরিদেবপুরে অয়ন মণ্ডল খুনে চাঞ্চল্যকর তথ্য এল সামনে । খুনের ব্লু-প্রিন্ট ছিল নাকি অয়ন মণ্ডলের বান্ধবীর মায়ের। আর তারপর কীভাবে দেহ লোপাট করা হবে, সেই ছক কষে বান্ধবীর বাবা। এমনটাই দাবি পুলিশ সূত্রে ।
'মা-মেয়ে, দু’জনের সঙ্গেই সম্পর্ক'
আগেই অয়নের বাবা দাবি করেছিলেন, মা-মেয়ে, দু’জনের সঙ্গেই সম্পর্ক ছিল হরিদেবপুরের অয়নের। এবার সেই দাবি পুলিশেরও । ত্রিকোণ সম্পর্কের জেরেই খুন অয়ন মণ্ডল, পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ‘দশমীর দিন অয়নকে বাড়িতে ডেকে ইট, বাঁশ-রড দিয়ে মারধরের জেরে মৃত্যু হয়। '
দেহ লোপাটের পরিকল্পনা
খুনের পর অয়নের দেহ লোপাটের পরিকল্পনা করে বান্ধবীর বাবা। পুলিশের দাবি, ‘দুই বন্ধুকে ডেকে পাশের নির্মীয়মাণ বহুতল থেকে ত্রিপল দিয়ে মোড়া হয় দেহ। তারপর মিনিডোরে করে হরিদেবপুর থেকে মগরাহাটে নিয়ে যাওয়া হয় মৃতদেহ। মৃতদেহ লোপাটের আগে অয়নের মোবাইল সুইচড অফ করে ফেলা হয় জলাশয়ে। বিষ্ণুপুরের নেপালগঞ্জে জলাশয়ে ফেলা হয় অয়নের মোবাইল ফোন। ওড়িশায় আত্মীয়ের বাড়িতে গা ঢাকা দেয় নিহতের বান্ধবীর ভাইয়ের এক বন্ধু !
'ত্রিপলে মুড়িয়ে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মগরাহাটে'
হরিদেবপুরে ২১ বছরের অয়ন মণ্ডলকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে তার বান্ধবী ও তাঁর মা-বাবা-নাবালক ভাই-সহ ৭। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে বান্ধবীর ভাইয়ের দুই বন্ধু ও এক গাড়িচালক। পুলিশ সূত্রে খবর, পণ্যবাহী গাড়ি ভাড়া করে তরুণের দেহ লোপাটের চেষ্টা করে বান্ধবীর পরিবার। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি মিনিডোর। বান্ধবীর বাড়িতে মারধরের জেরে অয়নের মৃত্যু হলে, বান্ধবীর ভাই তার দুই বন্ধুর সাহায্যে মিনিডোর ভাড়া করে আনে। এরপর ওই গাড়িতে করে ত্রিপলে মুড়িয়ে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মগরাহাটে।
অন্যদিকে, শুক্রবার রাতে হরিদেবপুরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় অয়নের মৃতদেহ। পুলিশের আশ্বাসে দেহ নিয়ে বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন মৃতের আত্মীয়রা। মাঝরাতে কেওড়াতলা শ্মশানে অয়নের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
দোষীদের শাস্তির দাবিতে দেহ নিয়ে বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে অয়নের পরিবার । শেষ পর্যন্ত পুলিশি তদন্তেই আস্থা রাখে হরিদেবপুরের নিহত যুবকের পরিবার। মৃতের বান্ধবী, তার মা ও ভাইকে গ্রেফতারের পর তার বাবাকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর রাতে হরিদেবপুরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় নিহত অয়নের মৃতদেহ। পুলিশের আশ্বাসে অবশেষে বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন আত্মীয়রা।