সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: প্রাথমিকে দুর্নীতি মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রাখল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। মানিক ভট্টাচার্যকে অপসারণের নির্দেশ বহাল রাখা হল। পাশাপাশি বহাল থাকল মানিক ভট্টাচার্যর ও তার পরিবারের সম্পত্তির হিসাব পেশের নির্দেশও। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকেই মান্যতা ডিভিশন বেঞ্চের। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে মান্যতা দিয়েছেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি লপিতা বন্দোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। একইসঙ্গে ২৬৯ জন প্রার্থীর চাকরি বাতিলের নির্দেশেও সিলমোহর হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের।


কারা মামলা করেছিল:
প্রাথমিক মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একাধিক নির্দেশকে ডিভিশন বেঞ্চে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল একাধিক পক্ষ। ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল রাজ্য, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, মানিক ভট্টাচার্য এবং চাকরি বাতিল হওয়া ব্যক্তিরা।

আরও নির্দেশ:
সিঙ্গল বেঞ্চের প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রাথমিক পর্ষদ। কেন ২৬৯ জনকে বাড়তি ১ নম্বর দেওয়া হয়েছিল তা আজ পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। ওএমআর শিট সহ সিঙ্গল বেঞ্চের সামনে একাধিক নথি পেশ করেনি পর্ষদ। বারবার নথি চেয়ে কোন ভুল করেনি সিঙ্গেল বেঞ্চ। পর্যবেক্ষণ বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি লপিতা বন্দোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের। পর্ষদের নথি ফরেনসিক পরীক্ষার নির্দেশ বহাল থাকবে। সিঙ্গল বেঞ্চ মামলার পর্যবেক্ষণ করবে, আদালতের নজরদারিতে দুর্নীতির তদন্ত হবে। নির্দিষ্ট সময় পরপর রিপোর্ট চাইতে পারবে সিঙ্গল বেঞ্চ। নির্দেশ বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি লপিতা বন্দোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের। মানিক ভট্টাচার্য সংক্রান্ত নির্দেশে হস্তক্ষেপ করেনি ডিভিশন বেঞ্চ। এর সঙ্গেই চাকরি থেকে বরখাস্ত ২৬৯ জন দ্রুত শুনানির আর্জি জানাতে পারবেন না, সেটাও জানিয়েছেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি লপিতা বন্দোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।

বিভিন্ন পক্ষের প্রতিক্রিয়া:
আইনজীবী ও সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 'যেটা হওয়া উচিত, আইনত এবং সংবিধানসম্মত ভাবে, বিচারপতি সেটাই করেছেন। দুর্নীতি থেকে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাঁচানোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই নির্দেশকে স্বাগত জানাই। আশা করব তদন্তকারী সংস্থা অন্যভাবে প্রভাবিত না হয়ে তদন্তে ঢিলেমি করেন।' 


বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, 'আগে আমরা দেখেছি, আগে কোনও এক কারণে সিঙ্গল বেঞ্চের রায় আটকানোর চেষ্টা হয়েছিল। এবার তা হয়নি। কারণ প্রমাণ সব বিরুদ্ধে রয়েছে। কোর্টের প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাস আরও শক্তপোক্ত হল।'


তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, 'একটা বেঞ্চের রায়কে আরেকটা বেঞ্চের মান্যতা দেওয়ার মানে কি অভিযোগ প্রমাণ হয়ে যাওয়া? দোষী সাব্যস্ত হয়ে প্রমাণিত হয়ে যাওয়া? বিরোধীরা যাঁরা বলছেন, তাঁদের ন্যূনতম শিক্ষা-দীক্ষা সম্পর্কে প্রশ্ন জাগছে।' 




আরও পড়ুন: জম্মু কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গিদের গুলিতে ক্ষতবিক্ষত এক বাঙালি