সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: গার্ডেনরিচ বহুতল বিপর্যয় (Garden Reach Building Collapse) নিয়ে পেশ করা রিপোর্টের ভিত্তিতে বেআইনি বহুতল নিয়ে পুরসভা ও প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। 'যতই আইন থাকুক , রাজ্যের সদিচ্ছা না থাকলে কিছুই হবে না', মন্তব্য় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির। 


মাসখানেক আগেই মাঝরাতে কেঁপে উঠেছিল গার্ডেনরিচ। বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় প্রাণ কেড়েছিল একাধিক নাগরিকের। ওই ঘটনার পর থেকে বেআইনি বহুতল তৈরি চক্র, অসাধু প্রোমোটারের সঙ্গে পুরসভার একাংশের যোগসাজশ নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল। স্থানীয়দের তরফে একাধিক অভিযোগ উঠেছিল প্রোমোটারদের একাংশের বিরুদ্ধে। তেমনই অভিযোগের আঙুল উঠেছিল কাউন্সিলরের দিকেও। ওই ঘটনায় স্থানীয় কাউন্সিলরকে আড়াল করার অভিযোগ উঠেছিল মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে রাজনৈতিক জলঘোলাও হয়েছিল। তারপরেই কলকাতা শহরে- বিশেষ করে গার্ডেনরিচ এলাকায় বেআইনি বাড়ি নিয়ে কড়া পদক্ষেপ শুরু করে পুরসভা। গার্ডেনরিচ বহুতল বিপর্যয়ের ঘটনায় মামলা ওঠে হাইকোর্টেও। সেই ঘটনা নিয়ে পেশ করা রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রশ্ন তুলল হাইকোর্ট।  


কী বলেছে হাইকোর্ট?
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, 'যতই আইন থাকুক , রাজ্যের সদিচ্ছা না থাকলে কিছুই হবে না। খাতায় কলমে রিপোর্ট দেখে ভালই লাগছে। কিন্ত আসলে কিছুই হচ্ছে না।' অস্ত্রোপচার সফল, রোগী মৃত, মন্তব্য হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির। তিনি আরও বলেছেন, 'প্রশাসনিক সদিচ্ছা থাকলে অনেক কিছু করা সম্ভব, কিন্তু সেটা না থাকলে কিছুই হবে না। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ইচ্ছায় কাজ করতে গেলে কিছুই হবে না। সরকারি আধিকারিকদের হাত বেঁধে রাখলে হবে না।'


পুরসভাকেও প্রশ্ন করেছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। 'আপনারা সদিচ্ছার অভাবে নিজেদের অফিসের সামনে হকার সমস্যার সমাধান করতে পারছেন না। কোনও দিন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন?' তিনি আরও বলেন, 'গার্ডেনরিচে ঘটনাস্থলে আরও একটি হলুদ রঙের বাড়ি আছে। ওই বাড়ির অবস্থাও ভাল না, কী করেছেন আপনারা?'


কী ঘটেছিল গার্ডেনরিচে?
১৭ মার্চ মধ্যরাতে গার্ডেনরিচের ফতেপুর ভেঙে পড়েছিল পাঁচ তলা একটি বহুতল। কলকাতা পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়িটি ভেঙে পড়ে। দুপুর ১২টার একটু আগে ঘটনাটি ঘটেছিল। গোটা ঘটনায় বেআইনি নির্মাণের দিকেই ছিল অভিযোগের আঙুল। রাত থেকেই শুরু হয়েছিল উদ্ধারকাজ। স্থানীয় বাসিন্দারাই শুরু করেছিলেন উদ্ধারকাজ। স্থানীয়রাই টর্চ নিয়ে শুরু করে উদ্ধার। দ্রুত এলাকায় এসেছিল দমকল-পুলিশ। উদ্ধারে নেমেছিল এনডিআরএফ-ও। ওই ঘটনায় পরে ধ্বংসস্তূপের নীচে থেকে উদ্ধার হয়েছিল আরও দেহ। মোট ১২ জন মারা গিয়েছিলেন ওই ঘটনায়।   


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।   


আরও পড়ুন: হাইকোর্টের রায়ে চাকরিহারা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই! আতান্তরে যোগ্য প্রার্থীরা